নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: প্রতি বছর শীতের মরশুমে ঘন কুয়াশার কারণে এমনিতেই দেরিতে চলে ট্রেন। পূর্ব কিংবা দক্ষিণ-পূর্ব রেলের কাছে এই ঋতু যেন মাথাব্যথার কারণ। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের একাধিক শাখায় গত কয়েক মাসে এমনিতেই দেরিতে চলছে একাধিক ট্রেন। সেই ভোগান্তি আগামী শীতে যে কয়েকগুণ বাড়তে চলেছে, সেব্যাপারে নিশ্চিত নিত্যযাত্রীরা।
২০১৮ সালে প্রথমবার ভারতীয় রেলে পরীক্ষামূলক ভাবে ‘ফগ পাস’ যন্ত্রের ব্যবহার শুরু হয়। জানা গিয়েছে, ওই যন্ত্রের সঙ্গেই লাগানো রয়েছে একটি এলইডি স্ক্রিন। সেই স্ক্রিনে চোখ রাখলে ট্রেনের চালক ঘন কুয়াশার মধ্যেও বুঝতে পারেন, সামনের সিগন্যাল লাল নাকি সবুজ। শুধু তাই নয়, একই লাইনে থাকা আগের ট্রেনটি কতটা দূরে রয়েছে, তাও জানিয়ে দেবে ওই ডিভাইস। লোকাল ট্রেনের চালকদের অনেকেই বলছেন, মূলত এক্সপ্রেস ট্রেনে এই অত্যাধুনিক ডিভাইসের ব্যবস্থা থাকলেও লোকাল ট্রেনে সেই সুবিধা নেই।
বুধবার সকালে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখার ফুলেশ্বর স্টেশনে ট্রেন লেট থাকার কারণে যাত্রী বিক্ষোভ চরমে ওঠে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলে সময় সারণি মেনে ট্রেন চলে না, যাত্রীদের এই অভিযোগ দীর্ঘদিনের। ফলে প্রতিদিনই নানা সমস্যার মুখে পড়তে হয় নিত্যযাত্রীদের। যাঁরা বিভিন্ন সরকারি বা বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন, তাঁদের বক্তব্য, ট্রেনের দেরির কারণে চাকরির ক্ষেত্রে তাঁদের সমস্যা হচ্ছে। এ নিয়ে বিভিন্নভাবে রেল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও কেউই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেননি। তাই এদিন বাধ্য হয়ে ফুলেশ্বর স্টেশনে অবরোধ করা হয়েছে। তিন মাস আগেও এই শাখার টিকিয়াপাড়া স্টেশনে একইভাবে যাত্রী বিক্ষোভ হয়েছিল। ক্ষুব্ধ নিত্যযাত্রীদের অনেকেই বলছেন, ‘ট্রেন লেটের ঘটনা শীতকালে প্রায়দিনই হবে। তখন রেল কুয়াশাকেই দায়ী করবে। অথচ প্রযুক্তিকে ব্যবহার করছে না তারা।’
এ নিয়ে নিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক বলেন, ‘ধাপে ধাপে ফগ পাস ডিভাইসের ব্যবহার বাড়ানো হচ্ছে। মূলত ঘন কুয়াশার জন্য দিল্লিগামী ট্রেনগুলি সমস্যায় পড়ে। তবে ট্রেন সময়মতো চালাতে অপারেটিং বিভাগ সবসময় তৎপর রয়েছে।’