সংবাদদাতা, উলুবেড়িয়া: সন্দেহের বশে স্ত্রীকে খুনের অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে শ্যামপুর থানার খাড়ুববেড়িয়া পঞ্চায়েতের মামুদপুর গ্রামে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত গৃহবধূর নাম সোনামণি বেগম (৩৭)। মঙ্গলবার রাতে ঘর থেকেই গৃহবধূর রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে শ্যামপুর থানার পুলিস। মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য উলুবেড়িয়ার শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মেডিক্যাল কলেজে পাঠিয়েছে পুলিস। ওই ঘটনার পর থেকেই পলাতক গৃহবধূর স্বামী হাবিল মল্লিক ওরফে লালু। শ্যামপুর থানার পুলিস ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় জরি শ্রমিক হাবিল মল্লিকের তিন মেয়ে, দুই ছেলে। তিন মেয়েরই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। দুই ছেলে থাকে ভিন রাজ্যে, কাজ করে সেখানে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর হাবিলের বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ বেরতে থাকে। গ্রামবাসীরা ওই পচা গন্ধের উৎস খুঁজতে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখেন, ভিতর থেকে দরজা বন্ধ। দরজা খুলে ভিতরে ঢোকার পর দেখা যায়, একটি ঘরে খাটের উপর মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন সোনামণি বেগম। তাঁর শরীরজুড়ে রক্তের দাগ। তাঁরাই শ্যামপুর থানায় খবর দিলে পুলিস এসে মৃতদেহটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়। পুলিসের প্রাথমিক অনুমান, দু’-তিনদিন আগেই গৃহবধূকে খুন করা হয়েছে।
স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য গোলাম মোস্তাফা মল্লিক বলেন, হাবিল মল্লিকের বড় ছেলে কর্মসূত্রে বিহারে এবং ছোট ছেলে বেঙ্গালুরুতে থাকে। মাঝে ছেলেরা বাড়িতে এসেছিল। সপ্তাহখানেক আগে ছোট ছেলে বেঙ্গালুরুতে ফিরে যায়। গত শনিবার বিহারে চলে যায় বড় ছেলে। তারপর এই দম্পতি বাড়িতেই ছিল। তিনি বলেন, মঙ্গলবার মৃতার জামাই আমার এক প্রতিবেশীকে বলেন, তাঁর শাশুড়িকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। এরপর ওই প্রতিবেশী সোনামণিকে ডাকাডাকি করলেও কোনও সাড়াশব্দ পাননি। এর মধ্যেই ওই বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ বেরতে শুরু করে। আমরা হাবিলের বাড়িতে গিয়ে দেখি, খাটে মশারি টাঙানো। খাটের নীচের দিকটা রক্তে ভেসে যাচ্ছে। মশারি তুলতেই গৃহবধূকে মৃত অবস্থায় দেখতে পাই। ওই পঞ্চায়েত সদস্য বলেন, গৃহবধূর মাথার পিছনে গভীর ক্ষত ছিল, মুখও বিকৃত হয়ে গিয়েছে। শনিবার বড় ছেলে বিহারে চলে যাওয়ার পরই সম্ভবত খুন করা হয়েছে সোনামণিকে। হাবিল ওর স্ত্রীকে সন্দেহ করত। এ নিয়ে সংসারে মাঝেমধ্যেই অশান্তি হতো। হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিসের এক কর্তা বলেন, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। গৃহবধূর স্বামীর খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।