• প্রকাশ্যে দুষ্কৃতীদের গুলি, ঝাঁঝরা তৃণমূল নেতা, জগদ্দলের ঘটনায় ধৃত ১
    বর্তমান | ১৪ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাকপুর: বুধবার সাতসকালে জগদ্দল থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে দুষ্কৃতীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গেলেন তৃণমূলের এক নেতা। এদিন সকাল ৯টায় ঘটনাটি ঘটেছে জগদ্দলের ৪ নম্বর গেট সংলগ্ন চাঁপদানি জুটমিলের উল্টোদিকের চায়ের দোকানে। এই এলাকাটি ভাটপাড়া পুরসভার অন্তর্গত। পুলিস জানিয়েছে, মৃতের নাম অশোক সাউ (৪০)। তিনি তৃণমূলের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন সভাপতি। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ২০২০ সালে গণপিটুনিতে মৃত্যু হয়েছিল আকাশ সাউয়ের। সেই মৃত্যুর ঘটনায় অভিযোগ উঠেছিল অশোক সাউয়ের দলবলের বিরুদ্ধে। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে অশোকের উপর একবার হামলার ঘটনা ঘটেছিল। আকাশের ভাই সুজল সম্প্রতি জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে। তাহলে সুজলই কি কাউকে দিয়ে খুন করিয়ে দাদার মৃত্যুর বদলা নিল? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পুলিস এই ঘটনায় কৌসর আলি নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে।


    এদিন সকালে চায়ের দোকানে বসেছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা অশোক সাউ। সেই সময় তিনজন হাঁটতে হাঁটতে চায়ের দোকানের সামনে আসে। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, দোকানে তখন অনেকেই বসেছিলেন। আচমকা দুষ্কৃতীরা অশোক সাউকে লক্ষ্য করে পরপর গুলি চালাতে থাকে। সব মিলিয়ে সাত-আট রাউন্ড তো হবেই। ওই অবস্থায় অশোক পালানোর চেষ্টা করলে তাঁর পিঠে গুলি লাগে। লুটিয়ে পড়েন তিনি। এরপর বোমা ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যায় তারা। জখম তৃণমূল নেতাকে ভাটপাড়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। বোমার স্প্লিন্টারে কয়েকজন আহতও হয়েছেন।  


    ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, হামলার ঘটনায় লণ্ডভণ্ড গোটা চায়ের দোকান। ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে বিস্কুটের কৌটো, গ্যাসের ওভেন, চা তৈরির সরঞ্জাম। জায়গায় জায়গায় পড়ে রয়েছে রক্তের ছোপ। জগদ্দল থানা এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এদিন ঘটনাস্থলে আসেন বারাকপুরের পুলিস কমিশনার অলোক রাজোরিয়া। তিনি বলেন, ডিসি নর্থ গণেশ বিশ্বাসের নেতৃত্বে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করা হয়েছে। এদিন দুপুরেই ঘটনাস্থলে আসেন সিআইডির বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াডের সদস্যরা। তাঁরা চায়ের দোকানে তল্লাশি চালান। কোথাও কোনও বিস্ফোরক রয়েছে কি না, তা দেখতে গিয়ে তাঁরা হদিশ পান একটি তাজা সকেট বোমার। সেটি নিষ্ক্রিয় করার জন্য নিয়ে গিয়েছেন তাঁরা।


    এই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন অশোক সাউয়ের পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা জগদ্দল থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান। মৃতের ভাই প্রদীপ সাউ বলেন, পুলিস কোনও সহযোগিতা করেনি। থানার নাকের ডগায় দাদাকে খুন করা হলেও পুলিস সময়মতো আসেনি।


    এই ঘটনায় ভাটপাড়ায় রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। বিজেপি নেতা অর্জুন সিং বলেন, তৃণমূলের কোন্দলের কারণেই এই খুন। হামলাকারীরা সকলেই তৃণমূলের কর্মী। সাংসদ পার্থ ভৌমিক বলেন, অর্জুন এলাকায় গুন্ডারাজ প্রতিষ্ঠা করেছেন। সেসব কারণেই খুনের ঘটনা ঘটেছে। যারা খুন করেছে, তারা পার পাবে না।
  • Link to this news (বর্তমান)