পড়াশোনার সুবিধার্থে রাজ্য সরকার একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের এককালীন ১০ হাজার টাকা দেয়। সরকারের ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের অধীনেই এই টাকা দেওয়া হয়। পুজোর আগে সংশ্লিষ্ট পোর্টালে ছাত্রছাত্রীরা ট্যাব কেনার টাকার জন্য আবেদন করেছিল। পুজোর পর থেকেই পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি সেই টাকা ঢুকতে শুরু করে। অভিযোগ, অনেক পড়ুয়ার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেই টাকা ঢোকেনি। শুরুটা হয়েছিল পূর্ব বর্ধমান জেলায়। সেখানে বেশ কয়েক জন পড়ুয়ার ট্যাবের টাকা অন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে বলে অভিযোগ করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। তার পর বিভিন্ন জেলা থেকেই পড়ুয়াদের টাকা গায়েবের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে।
শুধু জেলায় এই অভিযোগ সীমাবদ্ধ থাকেনি। কলকাতার বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়ারা টাকা না পাওয়ার অভিযোগ করছে। ইতিমধ্যেই এই মর্মে অভিযোগ দায়ের হয়েছে যাদবপুর, কসবা, বেনিয়াপুকুর, মানিকতলা, ওয়াটগঞ্জ, সরশুনা, জোড়াসাঁকো, গল্ফগ্রিন এবং ভবানীপুর থানায়। জানা গিয়েছে, যাদবপুরের এক স্কুলের ১২ জন পড়ুয়া এবং ঠাকুরপুকুরের এক স্কুলের ৩১ জন পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে ট্যাবের টাকা ঢোকেনি। এ ছাড়াও, কসবায় ১০, জোড়াসাঁকোয় ৪০, বেনিয়াপুকুরে পাঁচ জনের টাকা গায়েবের অভিযোগ জমা পড়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অভিযোগ এক জনের টাকা অন্যের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে।
ঘটনার তদন্তে বিভিন্ন জেলার পুলিশ সিট গঠন করে তদন্ত শুরু করেছে। গ্রেফতার করা হয়েছে বেশ কয়েক জনকে। বুধবারই সরশুনার স্কুলের পড়ুয়াদের টাকা গায়েবের অভিযোগে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম কৃষ্ণপদ বর্মণ এবং সরিফুল ইসলাম। তাঁদের মধ্যে এক জন কৃষক, অন্য জন চা-শ্রমিক। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের থেকে খবর পেয়ে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে ইসলামপুর থানার পুলিশ। সূত্রের খবর, দুই অভিযুক্তের সঙ্গেই যোগ রয়েছে সাইবার ক্যাফের। এই আবহেই এ বার কলকাতা পুলিশও সিট গঠন করে তদন্ত শুরু করল। কলকাতার স্কুলগুলির পড়ুয়াদের টাকা কোথায় যাচ্ছে, কারা কারা এই চক্রের সঙ্গে জড়িত, তা খতিয়ে দেখবে তারা।