• বারুইপুরের সেই বাগানে এখনও বেঁচে বাঞ্ছারামের স্মৃতি
    আনন্দবাজার | ১৪ নভেম্বর ২০২৪
  • ১৯৮০ সালে মুক্তি পেয়েছিল কালজয়ী বাংলা ছবি ‘বাঞ্ছারামের বাগান’। সদ্য প্রয়াত নাট্যকার-অভিনেতা মনোজ মিত্রের নাটক ‘সাজানো বাগান’ অবলম্বনেই ছবিটি বানিয়েছিলেন পরিচালক তপন সিংহ। ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন মনোজ নিজেই। বৃদ্ধ বাঞ্ছারামের ভূমিকায় তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়েছিল সর্বত্র। ছবির আউটডোর অংশের শুটিং হয়েছিল বারুইপুরের একটি বাগানে। সিনেমা মুক্তির পর থেকেই সেই বাগান বিখ্যাত হয়ে ওঠে ‘বাঞ্ছারামের বাগান’ নামেই। সেখানে শুটিংয়ের পঁয়তাল্লিশ বছর পরেও বাঞ্ছারামের স্মৃতি বয়ে একই রকম রয়েছে বারুইপুরের শিখরবালি-১ পঞ্চায়েত এলাকায় চক্রবর্তী পরিবারের সেই আমবাগান। বছর চারেক আগেও এক বার এই বাগানে ঘুরে গিয়েছিলেন মনোজ মিত্র।

    চক্রবর্তী পরিবারের এক আত্মীয়ের যোগাযোগ ছিল সিনেমা জগতে। সেই সূত্রেই তপন সিংহকে চিনতেন তিনি। সিনেমার জন্য যখন বাগান খুঁজছেন পরিচালক, তখন সেই আত্মীয়ই তাঁকে বারুইপুরে ওই বাগানে শুটিংয়ের প্রস্তাব দেন। সরেজমিনে দেখতে আসেন পরিচালক। বাগান পছন্দ হয় তাঁর। এর পরেই শুরু হয় শুটিং। চক্রবর্তী বাড়ির বর্তমান কর্তা দীপক চক্রবর্তী শুটিংয়ের সময়ে ছিলেন বছর বারোর কিশোর। তিনি জানান, টানা প্রায় এক মাস শুটিং চলেছিল এখানে। শুটিং চলাকালীন বারুইপুরেরই একটি বাড়িতে থাকতেন মনোজ মিত্র-সহ অন্য কলাকুশলীরা।

    দীপক জানাচ্ছেন, এখনও ওই বাগানে মাঝেমধ্যে সিনেমার শুটিং হয়। শীতকালে বনভোজনেও আসেন কেউ কেউ। কিন্তু এত বছরেও কয়েক বিঘা জুড়ে বিস্তৃত ওই বাগানের তেমন পরিবর্তন হতে দেননি তাঁরা। একই রকম আছে প্রাচীন আমগাছগুলি। বাগানের গাছগাছালি, পাখি, প্রাণিজগতের সুরক্ষার দিকে আলাদা করে নজর রাখা হয় বলেই জানান তিনি।

    কয়েক বছর আগে একটি ছবি তোলার জন্য আবার ওই বাগানে এসেছিলেন মনোজ মিত্র। দীপকের ছেলে, চক্রবর্তী বাড়ির নবীন সদস্য দ্বৈপায়ন চক্রবর্তী জানান, বাগানে এসে অতীতের স্মৃতিতে ডুব দেন মনোজ। প্রথম দিন ভোর চারটেয় শুটিং করেছিলেন অভিনেতা তথা নাট্যকার। সেই স্মৃতিচারণা উঠে আসে দ্বৈপায়নের কথায়। প্রথম দিনেই বাগানের পাশের একটি পুকুর থেকে জল তোলার দৃশ্য ছিল। শীতের ভোরে সেই দৃশ্য ক্যামেরায় ধরার বিবরণ এত দিন পরেও গড়গড় করে বলে গিয়েছিলেন মনোজ। দ্বৈপায়ন জানান, বাগানটি একই রকম আছে দেখে খুব খুশি হয়েছিলেন তিনি।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)