নব্যেন্দু হাজরা: ৯৯ বছরের অস্টিন থেকে ১৯২৮-এর ফোর্ড বা ১০৮ বছরের পুরনো গ্যাবরাডর। এইচএম অ্যাম্বাসাডর থেকে রোলস রয়েজ, মরিস। সঙ্গে কলকাতার একাধিক বনেদি রাজবাড়ির গাড়ি। যেগুলো সাধারণত রাস্তায় বেরোয় না। শোভা পায় বাড়ির গ্যারাজেই। গাড়ির দুনিয়ায় যাঁদের বলা চলে উত্তমকুমার, পাহাড়ি সান্যাল বা ছবি বিশ্বাস। কোনও র্যালি বা অনুষ্ঠানে কখনও সখনও সেগুলো চলতে দেখা যায় কলকাতার রাস্তায়। আবার তার স্থান হয় গ্যারাজেই। এককথায় তারা হল ভিনটেজ। এবার সেই ভিনটেজ গাড়িকেই নয়া স্বীকৃতি দিতে চলেছে রাজ্য সরকার।
৫০ বছরের পুরনো গাড়িকে দেওয়া হবে নতুন নাম্বার প্লেট। সরকারের খাতায় কলমে হবে নতুন রেজিস্ট্রেশন। আর স্বীকৃতি-স্বরূপ রাজ্যের তরফে দেওয়া হবে একটি পিতলের স্মারক। যা লাগানো থাকবে গাড়ির সামনে। ইতিমধ্যেই এই স্মারকের বেশ কয়েকটি নকশা দেখা হয়েছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে নবান্ন।
প্রশাসনসূত্রে খবর, শহরের এই গাড়িগুলোকে নতুন করে একই সিরিজের নতুন নাম্বার দেওয়া হবে। মোটর ভেহিক্যালস আইন মেনেই দেওয়া হবে পৃথক নাম্বার প্লেট। যেখানে ডব্লুবি-র পর ‘ভিএ’ লেখা থাকবে। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে পরিবহণ দপ্তরে। ভিনটেজ গাড়ির মালিকদের উৎসাহিত করতেই রাজ্য সরকারের তরফে সেই গাড়িগুলোকে স্বীকৃতির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
কলকাতার হেদুয়াতে ভিনটেজ গাড়ির মালিকদের একটি ক্লাব রয়েছে। সেখান থেকে নেওয়া হয়েছে শহরে চলা ভিনটেজ গাড়ি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য। জানা গিয়েছে, বর্তমানে কলকাতা শহরে ২০০টি ভিনটেজ গাড়ি রয়েছে। সেগুলোর তালিকা পরিবহণ দপ্তরে জমাও পড়েছে। সূত্রের খবর, আপাতত এই গাড়িগুলোকে ১০ বছরের জন্য রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হবে। তার পর আবার তা পুনর্নবীকরণ হবে। তবে এগুলোতে হাই সিকিউরিটি নাম্বার প্লেট লাগবে না। মোটর ভেহিক্যালস আইন মেনে বাহনের নতুনভাবে রেজিস্ট্রেশন করা হবে। এই কাজে এনআইসিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষ যাতে রাস্তায় গাড়িগুলোকে দেখেই আলাদাভাবে চিহ্নিত করতে পারেন, তাই নাম্বার প্লেটে বদল এবং গাড়িতে বিশেষ স্মারক লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
দপ্তরের এক কর্তা বলেন, “সরকারের এই পরিকল্পনার কথায় এই সব গাড়ির মালিকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। অনেকেই এ বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে বৈঠকও হয়েছে। খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে নির্দেশিকা জারি করা হবে।”