অভিরূপ দাস: রাজ্য স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম লঙ্ঘন করে চুটিয়ে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করছেন সরকারি হাসপাতালের পিজিটি। ঘটনায় রাজ্যের মুখ্যসচিবকে অভিযোগ জমা দিল ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডাক্তার অ্যাসোসিয়েশন। ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডাক্তার অ্যাসোসিয়েশনের তরফ থেকে ডা. অনিকেত দাস জানিয়েছেন, “ডা. মনোজিৎ মুখোপাধ্যায় সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের পিজিটি। বর্তমানে সাগর দত্তে যে রেসিডেন্ট ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন তৈরি হয়েছে তার সভাপতি হিসেবেও ওঁর নাম রয়েছে। রাজ্য স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী সরকারি হাসপাতালে পিজিটি হিসেবে যাঁরা কর্মরত তাঁরা বাইরে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে পারবেন না। কিন্তু সে সমস্ত নিয়ম উনি মানছেন না। নিজস্ব প্রাইভেট ক্লিনিক বানিয়ে সেখানে চুটিয়ে প্র্যাকটিস করছেন। প্রাইভেট প্র্যাকটিস করছেন একাধিক বেসরকারি নার্সিংহোমেও।” ঘটনায় অভিযোগ জানিয়ে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি চিঠি দেওয়া হয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তাকেও।
এই ঘটনা সামনে আসতেই চূড়ান্ত নিন্দা করেছেন সিনিয়র চিকিৎসকদের একটা অংশ। অবিলম্বে স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়কে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন সুপার ডা. করবী বড়াল জানিয়েছেন, “অভিযোগ যখন সামনে এসেছে স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিলকে বলব দ্রুত পদক্ষেপ নিন।”
সম্প্রতি, আর জি কর কাণ্ডের পর সরকারি হাসপাতালে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশ। সূত্রের খবর, সেই দলে ছিলেন ডা. মনোজিৎ মুখোপাধ্যায়ও। দেখা যায় সরকারি হাসপাতালে দুস্থ রোগীদের না দেখে অনেকেই সে সময় চুটিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে মোটা টাকার বিনিময়ে রোগী দেখেছেন। সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের ডা. অনিকেত দাস জানিয়েছেন, “নিজের ডিউটির টাইমে অনলাইনে, অফলাইনে প্র্যাকটিস করছেন ডা. মনোজিৎ মুখোপাধ্যায়। বঞ্চিত করছেন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পেতে আসা গরিব রোগীদের। হাওড়ার নেতাজিগড়ে মুখার্জি ক্লিনিক তৈরি করে চুটিয়ে প্রাইভেটে প্র্যাকটিস করছেন তিনি।”
ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অফ হেলথ সায়েন্সের নিয়ম অনুযায়ী, সরকারি হাসপাতালের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনিরা অন্য কোনও বেসরকারি হাসপাতাল অথবা নার্সিংহোমে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে পারবেন না। চিঠিতে মুখ্যসচিবকে জুনিয়র ডাক্তার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা জানিয়েছেন, “এটা শুধুমাত্র ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অফ হেলথ সায়েন্সের নিয়ম ভঙ্গ নয়। রেসিডেন্ট ডক্টর অ্যাসোসিয়েশনের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে নীতি বিসর্জন দিয়ে এই কাজটি করছেন ডা. মনোজিৎ মুখোপাধ্যায়। দ্রুত এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।”