মামলাটি করেছেন জলপাইগুড়ির রানিচেরা টিজি জুনিয়র হাই স্কুলের সামাজিক বিজ্ঞানের শিক্ষক দীপক পাসোয়ান। তাঁর বক্তব্য, ওই স্কুলে পড়ুয়া রয়েছে মাত্র ২৬ জন। তার মধ্যেও স্কুলে আসে পাঁচ-ছ’ জন পড়ুয়া। এমনকি কোনও কোনও দিন কোনও পড়ুয়াকেই স্কুলে দেখা যায় না। উপস্থিতির হার শূন্যও হয়ে যায় এক এক দিন। তাই তিনি অন্য স্কুলে বদলির জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন। তবে ওই আবেদন খারিজ হওয়ায় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে মামলা করেন তিনি। শুক্রবার মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি অমৃতা সিংহের একক বেঞ্চে। মামলাকারীর হয়ে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী উজ্জ্বল রায়। মামলাকারীর বদলির আবেদন বিবেচনা করে দেখার জন্য শিক্ষা দফতরের কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
ওই স্কুলে তিন জন শিক্ষক রয়েছেন। বৃহস্পতিবার মামলার শুনানিতে বিচারপতি জানতে চান, কেন ওই শিক্ষকের বদলির বিরোধিতা করা হচ্ছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, মামলাকারী শিক্ষক বদলি হয়ে গেলে ওই স্কুলে সামাজিক বিজ্ঞানের আর শিক্ষক থাকবেন না। হয়তো কোনও কারণে পড়ুয়ারা স্কুলে আসছে না। তাদের স্কুলমুখী করতে হবে। তবে মামলায় বিচারপতি সিংহের পর্যবেক্ষণ, যে স্কুলে পড়ুয়া নেই, সেখানে শিক্ষক গিয়ে কী করবেন— তা আদালতের বোধগম্য নয়। গত সেপ্টেম্বর মাসে এই মামলায় শিক্ষকের বদলির আবেদনটি পুনরায় খতিয়ে দেখার জন্য জেলা স্কুল পরিদর্শককে নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি।
আদালতের নির্দেশের পরে জেলা স্কুল পরিদর্শক জানিয়েছিলেন, ওই স্কুলের তিন শিক্ষককেই বাড়ি বাড়ি যেতে হবে। অভিভাবকদের বুঝিয়ে ছাত্রদের স্কুলে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। তা হলে স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। প্রয়োজনে বিডিও ওই কাজে শিক্ষকদের সাহায্য করবেন। তবে হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, শিক্ষকদের কি ওই নির্দেশ দিতে পারেন জেলা স্কুল পরিদর্শক? ছাত্র না এলে তাঁরা কী করবেন? শিক্ষকের কাজ ছাত্রদের পড়ানো। বাড়ি থেকে স্কুলে ডেকে আনা নয়।