গত ২৭ নভেম্বর ঝাড়গ্রামের রঘুনাথপুর এলাকার একটি লজের ভিতর থেকে উদ্ধার হয় চিকিৎসক দীপ্রের দেহ। ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজের অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগের সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তার হিসাবে কর্মরত ছিলেন তিনি। আদতে বেহালার বাসিন্দা দীপ্র বৃহস্পতিবার সকালেই পুজোর ছুটি কাটিয়ে ঝাড়গ্রামে ফেরেন। তার পর থেকে পরিবারের সদস্যেরা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। পুলিশ সূত্রে আগেই জানা গিয়েছিল যে, ব্যক্তিগত জীবনের নানা টানাপড়েনের কথা স্ত্রীকে মেসেজ করে জানিয়েছিলেন বছর বত্রিশের দীপ্র। পুলিশ সূত্রে খবর, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে দেহে আঘাতের কোনও চিহ্ন ছিল না। ফলে তদন্তকারীদের অনুমান, আত্মঘাতী হয়েছিল ওই চিকিৎসক। তাঁর দেহের পাশ থেকে একটি সিরিঞ্জও উদ্ধার করে পুলিশ। তাদের অনুমান, ওই সিরিঞ্জের মাধ্যমে দেহে কিছু প্রবেশ করানো হয়েছিল। তার ফলেই মৃত্যু হয় দীপ্রের। আত্মহত্যা হলেও তার নেপথ্যে কী কারণ, তা অনুসন্ধান করে দেখছেন তদন্তকারীরা। মৃত্যুর আগে স্ত্রীকে পাঠানো মেসেজ রয়েছে তাঁদের আতশকাচের নীচে। সেই মেসেজে ছিল আরজি করের প্রসঙ্গও। অনেকের কথায়, মেডিক্যাল কলেজে কোনও ‘হুমকি সংস্কৃতি’র শিকার হতে পারেন দীপ্র।
বৃহস্পতিবার হাই কোর্টে দায়ের হওয়া মামলায় সেই ‘হুমকি সংস্কৃতি’র প্রসঙ্গও তুলেছেন মামলাকারী। মামলাকারীর বক্তব্য, দীপ্রের মৃত্যু নিয়ে রহস্য রয়েছে। ওই চিকিৎসক বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা সংক্রান্ত একাধিক বিষয় নিয়ে সরব হয়েছিলেন। মৃত্যুর আগে তিনি নিজের স্ত্রী এবং ডাক্তারদের একটি গ্রুপে কর্মস্থলে হয়রানি, প্রাতিষ্ঠানিক অবহেলা, ‘হুমকি সংস্কৃতি’র কথা বলেছেন।
আবেদনকারীর আইনজীবী অনামিকা পণ্ডা আদালতে মামলা দায়ের করেন। সিবিআই তদন্ত ছাড়াও মামলাকারীর আর্জি, রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে ‘হুমকি সংস্কৃতি’ বন্ধ করা হোক। চিকিৎসকেরা যাতে মানসিক শান্তি নিয়ে কাজ করতে পারেন তা নিশ্চিত করুক আদালত। আগামী সপ্তাহে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।