অব্যবস্থা ও হয়রানি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে অভিযোগ জানালেন জন্ডিসে আক্রান্ত যুবক
বর্তমান | ১৫ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অব্যবস্থা ও রোগী হয়রানি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে অভিযোগ জানালেন শিলিগুড়ির বাবুপাড়ার বাসিন্দা অভিষেক সেনগুপ্ত। দীর্ঘদিন ধরে ২৭ বছর বয়স্ক ওই যুবক জন্ডিসে আক্রান্ত উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করাচ্ছেন।
তাঁর অভিযোগ, এখনও রোগ নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসা শুরু হয়নি। গত সোমবার আউটডোরে ডাক্তার দেখার পর তাঁকে একটি ওষুধের তালিকা ধরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু হাসপাতালের ফার্মাসি থেকে সব ওষুধ তিনি পাননি। চারটি ওষুধের মধ্যে শুধু গ্যাসের ওষুধ দিয়ে জানানো হয় বাকি তিনটি ওষুধ নেই। তিনি বলেন, সরকারি হাসপাতালে ওষুধ না থাকলে গরিব মানুষ বাঁচবে কীভাবে? এই প্রশ্ন করায় ফার্মাসির এক কর্মী আমাকে কটূ কথা বলেন। এর প্রতিবাদ জানালে হাসপাতালে এক আধিকারিক পুলিস নিয়ে এসে আমাকে গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে সেখান থেকে সরে যেতে বলেন। গোটা বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দপ্তরে ইমেল করে পাঠিয়েছি।
প্রায় দু’মাসেরও বেশি জন্ডিসে আক্রান্ত অভিষেকবাবু। হেপাটাইটিস-বি আক্রান্ত সন্দেহ করা হলেও এখনও সেব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারেননি চিকিৎসকরা। অভিষেকবাবু বলেন, ২৩ সেপ্টেম্বর আউটডোরে ডাক্তাররা আমাকে দেখে লিভারের ফাইব্রোস্ক্যান করতে বলেন। সেইমতো উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে আমাকে গত ২ নভেম্বর এই পরীক্ষা করার দিন দেওয়া হয়েছিল। সেই মতো গেলেও সেদিন পরীক্ষা হয়নি। আবার আমাকে ২৮ ডিসেম্বর এই পরীক্ষা করার দিন দেওয়া হয়েছে। ডাক্তাররা সন্দেহ করছেন হেপাটাইটিস বি-তে আক্রান্ত হয়েছি। তা নির্ণয়ের জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করতে এভাবে টালবাহানা করা হলে চিকিৎসা কবে শুরু হবে? যেকোনও পরীক্ষার ক্ষেত্রে এরকম বিলম্বিত করা হয়। গরিব মানুষের পক্ষে সম্ভব নয় বেসরকারি প্যাথলজি থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসা করানো। এই গাফিলতির জন্য চিকিৎসা শুরুর আগেই রোগীর মৃত্যু হতে পারে।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে এরকম একগুচ্ছ অভিযোগ প্রসঙ্গে হাসপাতাল সুপার সঞ্জয় মল্লিক বলেন, আমাদের কাছে এধরনের কোনও অভিযোগ এখনও আসেনি। নির্দিষ্ট তথ্য সহ অভিযোগ পেলে তা খতিয়ে দেখা হবে। গাফিলতি থাকলে পদক্ষেপ করা হবে। এদিকে বৃহস্পতিবার অভিষেকবাবু বলেন, ওই ফার্মাসি কর্মী যদি দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা না চান তাহলে আমি সুপারের ঘরের সামনে আমরণ অনশনে বসে মৃত্যুবরণ করব। সেদিন তিনি আমাকে মরে যেতে বলেছেন।