• সারোগেসির জন্য ধৃত দম্পতি দরিদ্র মহিলাদের টার্গেট করত
    বর্তমান | ১৫ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: শিশু বিক্রির তদন্তে এবার সারোগেসির তত্ত্ব উঠে আসছে। শালিমার থেকে উদ্ধার হওয়া শিশুর জন্ম হয়েছিল এই পদ্ধতিতে। চক্রের পাণ্ডার স্ত্রী মুকুল সরকার আইভিএফ সেন্টারে সারোগেসির কাজ করা নিম্নবিত্ত মহিলাদের টার্গেট করত। এমনকী মুকুল নিজেও একসময়ে এই কাজ করেছে। তদন্তে নেমে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে সিআইডির হাতে। পাশাপাশি এই কাজে সাহায্য করার অভিযোগে বেশ কিছু আইভিএফ সেন্টার, বেসরকারি নার্সিংহোম ও চিকিৎসকের নাম উঠে আসছে বলে খবর। এই বিষয়ে তথ্য জোগাড় চলছে।


    শিশু পাচারকাণ্ডে মুকুলকে জেরা করে তদন্তকারীরা জেনেছেন, সে একটি আইভিএফ সেন্টারে কাজ করত। সেখানে এসির কাজ করতে যেতো মানিক হালদার। সেই সূত্রেই দু’জনের মধ্যে পরিচয় এবং বিয়ে হয়। ওই সময় মুকুল আইভিএফ সেন্টারে সারোগেসির কাজ করত। তার কাছ থেকে এভাবে মা হওয়া ও নিঃসন্তান দম্পতিদের মধ্যে সন্তানের চাহিদা শুনে মানিক শিশু বিক্রির ব্যবসার ছক কষে। তদন্তকারীদের কাছে মানিক জানিয়েছে, বিভিন্ন আইভিএফ সেন্টারে স্পার্ম ও এগ ডোনেট করতে আসা ছেলে ও মেয়েদের সে খুঁজে বেড়াত। তাঁদের থেকে নমুনা নেওয়ার পর কোনও আইভিএফ সেন্টারে পাঠানো হতো সংরক্ষণের জন্য। এরপর আর্থিক দিক থেকে দুর্বল মহিলাদের খুঁজে বের করে তাঁদের টাকার টোপ দিয়ে সারোগেসির কাজ করতে বলা হতো। যাঁরা রাজি হতেন, তাঁদের নিয়ে আসা হতো আইভিএফ সেন্টারে। শুক্রাণু–ডিম্বাণুর মিলন ঘটিয়ে প্রতিস্থাপন করা হতো তাঁদের গর্ভে। সন্তান জন্মানোর পর তা নিঃসন্তান দম্পতিদের বিক্রি করা হতো মোটা টাকার বিনিময়ে। আইভিএফ সেন্টারের যে সমস্ত ডাক্তার অভিযুক্তদের সাহায্য করেছিলেন, তাঁদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে। 


    তদন্তকারীদের বক্তব্য, তাঁদের সহযোগিতা ভিন্ন গোটা কাজটি সম্ভব নয়। সেই সঙ্গে যে সমস্ত নার্সিংহোমে এই শিশুদের জন্ম হতো, তাদের তালিকা তৈরি হচ্ছে। যে শিশুটি উদ্ধার হয়েছে, তার জন্ম হয়েছিল সারোগেসি পদ্ধতিতে। তদন্তকারীরা জেনেছেন, টাকার বিনিময়ে গর্ভ ভাড়া দিচ্ছেন এমন মহিলার সংখ্যা কত, সেটা জানার চেষ্টা চলছে। একইসঙ্গে এর নেটওয়ার্ক যে বিহারে ছড়িয়ে রয়েছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত তদন্তকারীরা। অভিযুক্তের একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের খোঁজ মিলেছে। সেখানেও বিপুল পরিমাণ টাকার লেনদেন হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এই অ্যাকাউন্টগুলি ফ্রিজ করার জন্য ব্যাঙ্কের কাছে চিঠি পাঠানো হচ্ছে বলে খবর। 
  • Link to this news (বর্তমান)