• আবাসের টাকা হাতানোর নিত্যনতুন কৌশল! সুপার সার্ভেতে গিয়ে চক্ষু চড়ক গাছ জেলাশাসকের...
    ২৪ ঘন্টা | ১৫ নভেম্বর ২০২৪
  • কিরণ মান্না: আবাস যোজনার বাড়ির টাকা পেতে ছলাকলার শেষ নেই। কেউ গোয়ালঘর, কেউ আবার রান্নাঘরে চৌকি পেতে আবাসের টাকা আদায়ে সংসার পাতছেন। এসব অনিয়ম আটকাতে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় সুপার চেকিং চলছে। জেলাশাসক,  অতিরিক্ত জেলাশাসক, মহকুমা শাসক, বিডিওরা সুপার চেকিং করছেন। তাতেই রোজ আবাসের টাকা হাতানোর নিত্যনতুন কৌশল সামনে আসছে।

    ১০ নভেম্বর পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক কোলাঘাটের বিডিওকে নিয়ে ওই ব্লকের পুলশিটা গ্রাম পঞ্চায়েতের কুমারহাট গ্রামে সুপার চেকিংয়ে গিয়েছিলেন। দেউলিয়া বাজার থেকে খন্যাডিহি যাওয়ার পিচরাস্তার ধারে কুমারহাট গ্রামে জলধর মান্নার বাড়ি। একতলার মস্ত পাকা বাড়ি। সামনে একটি ছোট মাটির ঘর। সেটি বন্ধ থাকে। জলধরবাবুর নাম আবাস প্লাস তালিকায় রয়েছে। পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও জলধরবাবু আবাস যোজনায় টাকা পেতে ছোট মাটির বাড়িটিকে থাকা শুরু করেন। এজন্য নিজেকে কুঁড়েঘরের মালিক বলে জাহির করেন। অপরদিকে, পিচ রাস্তার ধারে মার্বেল লাগানো মস্ত পাকা আর তা দেখেই চক্ষু চরক গাছ জেলা শাসকের।

    জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি এবং বিডিও অর্থ ঘোষ সুপার চেকিংয়ে জলধরবাবুর বাড়িতে হাজির হয়েছিলেন। পেশায় ক্ষৌরকার জলধরবাবু জেলাশাসকের সামনে জানান, কুঁড়েঘরের মালিক তিনিই। মস্ত পাকাবাড়ির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নেই। তাঁর দুই ছেলে ভবতোষ ও শঙ্কর ওই পাকাবাড়ি বানিয়েছে। 

    দুইভাই সেখানে থাকে। ওই কথা শোনার পরই জেলাশাসক জলধর ও তাঁর স্ত্রী দুই ছেলের সঙ্গে থাকেন কিনা সেটা যাচাই করতে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। এবং দুই ছেলে বাবা মাকে কেন দেখছে না তার আইনস্টেপ নেওয়ার কথার ও বলেন। এলাকার লোকজন অবশ্য জেলাশাসকের কাছে আসল ঘটনা খুলে বলেন। তাঁরা জানান, পাকা বাড়িতেই গোটা পরিবার বসবাস করে। সামনের ওই বাড়ি বন্ধই থাকে। আবাস প্লাসের ভিজিটের জন্য সেই কুঁড়েঘরে তক্তপোশ পাতা হয়েছে। এরপরই ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে জলধরের নাম আবাস তালিকা থেকে কাটার জন্য বিডিওকে নির্দেশ দেন ডিএম। যদিও জলধর বাবুর ছেলেদের অভিযোগ ২০১৮ সালে সার্ভিস সময় আমাদের মাটির বাড়ি ছিল, বাড়িতে থাকা অসুবিধার কারণে আমরা ছোট বাড়ি বানিয়েছি।স্থানীয় তৃণমূল উপপ্রধান আবাস যোজনা পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা চেয়েছিল সেটা দিতে পারিনি বলে এমন চক্রান্তের শিকার আমরা। জেলাশাসকের আইনি পদক্ষেপের কথা শুনেই ছেলে বলেন বর্তমানে বাবা-মা পাকা বাড়িতেই আছে।।যদিও সমস্ত অভিযোগ বৃত্তিহীন বলেন  উপপ্রধান রবীন্দ্রনাথ মান্না, তিনি বলেন সরকার সঠিক কাজ করছে। আমরা তো আবাস যোজনা এখনো সার্ভিস করছি না, সমস্ত জেলা শাসকের তত্ত্বাবধানে হচ্ছে। এর সাথে আমাদের আর কোন সম্পর্ক নেই। যদিও এ নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।

     

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)