সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পড়ুয়াদের সুবিধার্থে রাজ্য সরকারের ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি সামনে এসেছে। পড়াশোনার জন্য যে ট্যাব দেওয়া হয়, সেই টাকা তছনছ হয়েছে। গোটা রাজ্যজুড়েই এই জালিয়াতি হয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন গ্রেপ্তারও হয়েছে। এই সংক্রান্ত একগুচ্ছ অভিযোগ পেয়ে তড়িঘড়ি সিট গঠন করেছে কলকাতা পুলিশ। শুক্রবার এনিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন এডিজি, দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার। তিনি জানালেন, এই জালিয়াতি চক্র শুধুমাত্র বাংলাতেই নয়, এর জাল ছড়িয়ে রয়েছে মহারাষ্ট্র, রাজস্থানে। আন্তর্জাতিক যোগ থাকার সম্ভাবনাও প্রবল। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মোট ১১ জনকে এখনও পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইপিএস সুপ্রতিম সরকার।
সপ্তাহখানেক ধরে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্যাবের টাকা বেহাত হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। চোপড়া থেকে এর সূত্রপাত। উত্তর দিনাজপুরের এই জেলা থেকেই প্রথম ট্যাব কেলেঙ্কারিতে গ্রেপ্তার করা হয়। এই জেলাই দুর্নীতির কেন্দ্র বলে জানা গিয়েছে। পরবর্তীতে অবশ্য মালদহের বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয় দক্ষিণবঙ্গ থেকে। এখনও পর্যন্ত গ্রেপ্তারির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এগারোয়। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে এই সংক্রান্ত তদন্তের খুঁটিনাটি জানালেন এডিজি, দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার। তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ট্যাবের টাকা তছনছ হয়েছে মোট ১৯১১ জন পড়ুয়ার। রাজ্য সরকার ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে মোট ১৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছিল। সেই অর্থ নয়ছয় করা হয়েছে।
এডিজি, আইনশৃঙ্খলা সুপ্রতিম সরকার আরও জানান, মহারাষ্ট্র, রাজস্থানেও এধরনের জালিয়াতি হয়েছে এবং সেসব রাজ্যে এই চক্র ছড়িয়ে। এর সঙ্গে আন্তর্জাতিক যোগ থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ। সমস্ত বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। শিক্ষা দপ্তরের কাছ থেকে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে ফ্লো চার্ট। তাঁর বক্তব্য, আগামী দিনে যাতে এ ধরনের দুর্নীতি না হয়, তার জন্য আগাম সতর্কতা অবলম্বন করা হবে। বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বেশ উদ্বিগ্ন। তিনি জানিয়েছেন, যাদের টাকা বেহাত হয়েছে, তাদের নতুন করে টাকা দিয়ে দেওয়া হবে। তাঁর সেই নির্দেশে ইতিমধ্যে টাকা ফের পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে দেওয়া শুরু হয়েছে। তবে এই চক্রের হদিশ পেতে দ্রুত কাজ করছে বলে জানিয়েছেন পুলিশকর্তা।