শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে পরের বার থেকে পড়ুয়াদের দেওয়া অ্যাকাউন্ট নম্বর এবং সংশ্লিষ্ট পড়ুয়ার নামেই অ্যাকাউন্ট আছে কি না, তা যাচাই করা হবে। সেই যাচাই প্রক্রিয়াই হবে পাঁচটি ধাপে। প্রথমে তা যাচাই করবে স্কুল। তার পর ব্লক স্তরে স্কুল ইনস্পেক্টর (এসআই)। তৃতীয় ধাপে সেই তালিকা যাবে ডিস্ট্রিক্ট ইনস্পেক্টর (ডিআই)-এর কাছে। সংশ্লিষ্ট ডিআই পড়ুয়াদের নাম-অ্যাকাউন্ট নম্বরের তালিকা যাচাই করার পর তা পাঠানো হবে শিক্ষা দফতরে। বিকাশ ভবনেও সব তথ্য যাচাই হবে। পঞ্চম ধাপে তালিকা যাবে ব্যাঙ্কের কাছে। সব কিছু ঠিক থাকলে সেই তালিকা আবার পাঠানো হবে শিক্ষা দফতরে। তার পরেই শিক্ষা দফতর সেই তালিকা অর্থ দফতরে পাঠাবে। তারাই পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাবে।
ট্যাব প্রকল্পে অর্থ দেওয়ার ক্ষেত্রে লক্ষ্মীর ভান্ডারকে ‘মডেল’ হিসাবে অনুসরণ করার পরামর্শও শিক্ষা দফতরকে দিয়েছে নবান্ন। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্যাব কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার পর সোমবার নবান্নে বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করেছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। সেখানে শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের সেই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের বলা হয়েছে, আগামী বছর থেকে ট্যাবের টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে যাতে একটিও বেনিয়মের ঘটনা না ঘটে, সে দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। কারণ, প্রত্যেক প্রকল্পের অর্থ দেওয়ার উপর রাজ্য সরকারের ‘ভাবমূর্তি’ নির্ভর করে। সেই প্রক্রিয়ায় ‘স্বচ্ছতা’ থাকা জরুরি। কোনও প্রকল্পের অর্থ খরচে বেনিয়ম পাওয়া গেলে তার দায় বহন করতে হয় রাজ্য সরকারকেই। তাই এ ক্ষেত্রে আরও সচেতন থাকতে হবে।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, নবান্নের শীর্ষ আধিকারিকেরা জেনেছেন, ট্যাব কেনার টাকা দেওয়ার জন্য ‘বাংলার শিক্ষা’ পোর্টালে পড়ুয়াদের নাম নথিভুক্ত করতে হয় স্কুলগুলিকে। যে সব স্কুলে একাদশ-দ্বাদশে বৃত্তিমূলক কোর্স পড়ানো হয়, সেখানে ‘তরুণের স্বপ্ন’ নামে পৃথক একটি পোর্টালেও নাম নথিভুক্ত করা যায়। ছাত্রছাত্রীদের নাম, ব্যাঙ্কের নাম, শাখা, আইএফএসসি ও অ্যাকাউন্ট নম্বর পোর্টালে দিয়ে নথিবদ্ধ করতে হয়। সেখানে আধার কার্ড নম্বর দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। ছাত্রছাত্রীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আধার সংযুক্তিকরণ না থাকাতেই অর্থ দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়েছে। কিন্তু লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে টাকা দেওয়ার সময় এমন সমস্যা হয় না। সেই সূত্রেই লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পটিকে ‘মডেল’ হিসেবে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যে হেতু নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ দফতর লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পটি পরিচালনা করে, তাই অর্থ দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের সঙ্গেও আলোচনা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে স্কুলশিক্ষা দফতরকে।