সরকারি প্রকল্পে বাধা, পুরুলিয়া-২ ব্লকে প্রশাসনের সঙ্গে সংঘাত আরও বাড়ছে
বর্তমান | ১৬ নভেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: রাস্তার দাবিতে সরকারি প্রকল্পে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল আগেই। যা নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে আগেই সংঘাতে জড়িয়েছে তৃণমূলের একাংশ। এবার সেই সংঘাত আরও বাড়ল। শুক্রবার পুরুলিয়া-২ ব্লকের গোপালপুর এলাকায় বাসিন্দাদের নিয়ে পথ অবরোধে শামিল হলেন কিছু তৃণমূল নেতা। দুঃস্থদের জন্য নির্মীয়মাণ সরকারি হোমের পাঁচিল দিতে হবে ১৫ ফুট জায়গা ছেড়ে। রাস্তার জন্য সেই জায়গা না ছাড়লে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গণশিক্ষা সম্প্রসারণ দপ্তরের উদ্যোগে পুরুলিয়া-২ ব্লকের পিঁড়রা গ্রাম পঞ্চায়েতের গোপালপুর মৌজায় ১০একর জমিতে দুঃস্থ, অনাথ শিশুদের জন্য সরকারি হোম তৈরি হবে। ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রকল্পের শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় এক কোটি টাকা খরচে জমির সীমানায় প্রাচীর তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। সেই প্রাচীর তৈরি নিয়েই গণ্ডগোল বেঁধেছে। বিক্ষোভকারী তৃণমূল নেতাদের দাবি, বলরামপুর, চাকিরবন, পলাশকলা, লোহারশোল, ডাবর, শিমু্লট্যাঁড়, পালঞ্জা সহ একাধিক গ্রামের মানুষজন মেঠোপথ ধরে যাতায়াত করে। প্রাচীর তৈরি হলে সেটা সম্ভব হবে না। তারজন্য অন্তত ১৫ ফুট জায়গা ছেড়ে প্রাচীর দিতে হবে।
গত রবিবার ঘটনাস্থলে যান জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়। সরেজমিনে তদন্ত করার পর রাস্তার প্রয়োজনে আলোচনার জন্য প্রশাসনের বিভিন্নস্তরে চিঠি পাঠিয়ে কাজ বন্ধ রাখার আবেদন জানান তিনি। যদিও সেই দাবিতে দ্বিমত পোষণ করে গোপালপুরের বাসিন্দাদের একাংশ। তাদের পাল্টা দাবি, প্রশাসনের সিদ্ধান্তমতোই কাজ হোক। এখানে এত চওড়া রাস্তার কোনও প্রয়োজন নেই। তাঁদের অভিযোগ, আসলে বিষয়টিতে কিছু নেতার স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে। প্রোমোটারকে সুবিধা করে দিতেই সরকারি কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে। গত রবিবার এনিয়ে সহ সভাধিপতির সঙ্গেও উত্তপ্ত বাদানুবাদ হয় গ্রামের বাসিন্দাদের।
তবে, রাস্তা নিয়ে ‘নাছোড়বান্দা’ তৃণমূলের একাংশ। রাস্তার অনুমোদনের বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে জেলা পরিষদের শিক্ষা স্থায়ী সমিতির বৈঠক ডাকা হয়। যদিও গণশিক্ষা সম্প্রসারণ দপ্তরের কোনও আধিকারিক না থাকার জন্য মিটিং অসম্পূর্ণ থেকে যায়। এরপরই এদিন কিছু মহিলাকে দিয়ে পথ অবরোধ করায় তৃণমূল। তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি কাজল পাল, পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ রাজপতি মাহাতরা উপস্থিত ছিলেন। ঘণ্টাখানেক পর অবশ্য অবরোধ উঠে যায়। কাজলবাবু ও রাজপতিবাবু বলেন, রাস্তাটি অত্যন্ত প্রয়োজন। প্রশাসনকে পুনর্বিবেচনা জন্য আবেদন করব। প্রশাসনের এক আধিকারিক অবশ্য বলেন, বিষয়টির উপর রাজ্য কড়া নজর রাখছে। এর বেশি কিছু বলা যাবে না।