টেন্ডার দুর্নীতি মামলায় অর্জুনকে ভবানী ভবনে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি। বৃহস্পতিবার হাজিরা দেন অর্জুন। শুক্রবার আদালতে হাজিরা দিতে গিয়ে প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ জানান, হাজিরা দিলেও সিআইডি দফতরে তিনি কিচ্ছুটি মুখে দেননি। চা-কফি তো দূরের কথা, জলও স্পর্শ করেননি। তিনি আশঙ্কা করেন, ‘‘বাইরে থেকে আনা রাশিয়ান বিষ বা অন্য কিছু কেমিক্যাল মিশিয়ে দেওয়া থাকতে পারে পানীয়ে, যার ফলে ধীরে ধীরে মৃত্যু হতে পারে। এমনকি, চেয়ারের পাশে কিছু স্প্রে করা হলেও কিছু দিন পর মারা যেতে পারেন ওই ব্যক্তি।’’
উল্লেখ্য, ২০১০ থেকে ২০১৯ সালের গোড়া পর্যন্ত তৃণমূল পরিচালিত ভাটপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন অর্জুন। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগে তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তার পরেই ওই পুরসভার সাড়ে চার কোটি টাকার টেন্ডার দুর্নীতি নিয়ে সিআইডির আর্থিক অপরাধ দমন শাখা তদন্ত শুরু করেছিল। ২০২১ সালেও এই মামলায় অর্জুনকে তলব করা হয়েছিল। তবে অর্জুনের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে ৩৬৫টা মামলা করেছে তৃণমূল। কিন্তু ৩৬৫ মিনিটও তাঁকে জেলে রাখতে পারেনি। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলে তো আমি গুডবয় ছিলাম! স্বয়ং মমতাদিই বলেছেন। আর আজ বিজেপি করায় দুর্নীতিবাজ? চারশো কোটি টাকা হলে দেখা যেত, মাত্র চার কোটি টাকার দুর্নীতি মামলায় কিনা অর্জুন সিংহকে তলব!’’ পরে অর্জুন দাবি করেন, সিআইডি তদন্তের নামে ডেকে এমন রাসায়নিক ‘স্প্রে’ করে দেওয়া হয়, তাতে দু’-তিন মাস পর মাল্টি অরগ্যান ফেলিওর হয়ে মারা যেতে পারেন কেউ। তিনি বলেন, ‘‘৬ মাসের মধ্যে মাল্টি অরগ্যান ফেলিওর হয়ে আমার মৃত্যু হলে সরকার দায়ী। রাশিয়া থেকে রাসায়নিক এনে খুনের চক্রান্ত চলছে। আমি ডাক্তারি পরীক্ষা করাব। যে চেয়ারে বসেছিলাম তার ছবি তুলতে চেয়েছিলাম। আদালতকে সেটা জানাব।’’ শনিবার হাসপাতালে যাওয়ার পথে অর্জুন বলেন, ‘‘রক্তে কিছু প্রবেশ করেছি কি না, সব টেস্ট করাব।’’
অর্জুনের অভিযোগ নিয়ে আগেই কটাক্ষ করেছে শাসক শিবির। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘কোন কেমিক্যাল মানুষের জন্য ক্ষতিকর, কোনটা কী ভাবে ক্রিয়া করে অর্জুন সিংহের সে নিয়ে অভিজ্ঞতা রয়েছে ভাল।’’ তবে অর্জুন জানিয়েছেন, তাঁর যদি কিছু হয় তিনি আদালতে যাবেন। রাজ্য সরকারের মুখোশ খুলে দেবেন। তিনি বলেন, ‘‘রাশিয়ান রাসায়নিক স্মাগলিং করে আনার কথা সবাই জানে। বলার সাহস সবার থাকে না। যারা একটু পড়াশোনা করে তারা জানে।’’