শনিবার ১ নম্বর ওয়ার্ডে বাসস্ট্যান্ড পাম্প হাউস-সহ একাধিক ঢালাই রাস্তার উদ্বোধন করেন সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই উদ্বোধনীমঞ্চ থেকেই ফের সিপিএম-বিজেপিকে নিশানা করেন কল্যাণ। এদিন মহম্মদ সেলিমকে চ্যালেঞ্জ ছোড়েন তৃণমূল সাংসদ। বলে দেন, ২০২৬ সালেও কোনো বিরোধী দলনেতা হবে না রাজ্যে। কল্যাণ তৃণমূল কাউন্সিলরের গুলি-প্রসঙ্গে বলেন, একটু ভালো করে খোঁজ নিলে দেখা যাবে, বিজেপি-সিপিএম রয়েছে এর পিছনে। বিজেপি আর সিপিএম যে ভাবে হিংসাত্মক কার্যকলাপ করছে এই ঘটনা তারই জ্বলন্ত নিদর্শন।
শনিবার বেলা নাগাদই জানা গিয়েছিল, কসবায় কাউন্সিলরকে গুলি করে খুনের চেষ্টার ঘটনার তদন্তে কলকাতা পুলিসের গোয়েন্দা বিভাগ। এদিকে কাউন্সিলের খুনের চেষ্টায় গ্রেফতার হয়েছে ট্যাক্সিচালক। যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে তার নাম যুবরাজ সিং! এর থেকেই বাকিদের খবরাখবর নেওয়া হচ্ছে। খুনের মোটিভ কী?ব্যক্তিগত কোনও কারণে ওই কাউন্সিলরকে খুন করার চেষ্টা নাকি রাজনৈতিক কারণে তাঁকে খুন করার চেষ্টা? এটাই এখন জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। ট্যাক্সি চালককে দফায়-দফায় জেরা করছে পুলিস। ঘটনা সম্পর্কে সে ওয়াকিবহাল মনে করা হচ্ছে। কারণ হাওড়া স্টেশন থেকে তিনজনকে খিদিরপুর নিয়ে গিয়েছিল এই ট্যাক্সিচালকই। তারপর খিদিরপুর থেকে তাদের তিলজলাতেও নিয়ে আসে সে-ই। ইকবাল-সহ বাকিরা পরে তার ট্যাক্সিতেই পালায়।
এদিকে জানা গিয়েছে, আগ্নেয়াস্ত্র দুটি ছিল ধৃত ছেলেটির কাছে। গুলির চেষ্টার পর মিস হওয়ায় ছেলেটি কোমরে আগ্নেয়াস্ত্র গুঁজে বাইকে উঠতে যায়। এরপর সুশান্ত ঘনিষ্ঠ যে-যুবক ওকে ধরতে যান, তিনি পিছন থেকে ওই ছেলেটির কোমরে ঘুঁষি মারেন। একটি আর্মস পড়ে যায় কোমর থেকে। সেটি উদ্ধার হয় সঙ্গে সঙ্গে। এরপর ছেলেটি পালাতে থাকে। দৌড়তে-দৌড়তেই খালপাড়ের দিকে জঙ্গলের মধ্যে কোমরে আগে থেকে রাখা অন্য একটি আর্মস সে ছুঁড়ে ফেলে দেয়।
কসবা শুটআউট-কাণ্ডে আগেই জানা গিয়েছিল, কসবায় কাউন্সিলর খুনের চেষ্টায় বিহার-যোগ রয়েছে। মোট ৩ জন আসে বিহারের বৈশালী থেকে। তাদের খিদিরপুরে একটা জায়গায় রাখা হয়। সেখান থেকে দুজন বাইকে করে আসে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিসের অনুমান, ৫ থেকে ৬ জন যুক্ত এই ঘটনায়। খিদিরপুর থেকে প্রথমে একটা ট্যাক্সি করে আসে অভিযুক্তরা। তারপর স্কুটিতে করে স্পটে পৌঁছয়। সেই ট্যাক্সিচালককে চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হয়েছে। ট্যাক্সিচালক ঘটনার সম্পর্কে জানে এবং সে-ই বাকিদের পালাতে সাহায্য করে বলে অনুমান ধৃতকে জেরা করে ঘটনার সম্পর্কে জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিস।
তদন্তে পুলিস জানতে পেরেছে, বন্দুকের ট্রিগার লক হয়নি! জেরায় ধৃত যুবক দাবি করে, গতকাল বিহার থেকে নিয়ে আসা তিনজনকে খিদিরপুর থেকে ট্যাক্সি করে তিলজলা এলাকাতে নিয়ে আসা হয়। 'মহম্মদ ইকবাল' নামে এক ব্যক্তি ধৃতকে কাউন্সিলরের ছবি দেখায়, বলে, 'একে মারতে হবে'! তারপর স্থানীয় এক যুবকের স্কুটারের পিছনে বসে তাকে কসবা যেতে বলা হয়। ধৃতের দাবি, ইকবাল তাকে বলেছিল, 'বন্দুক দিয়ে ভয় দেখিয়ে পালিয়ে যাবে তুমি। আমরা পিছনে ট্যাক্সিতে থাকব। বাকি কাজ আমরা করে নেব।'
এখন ধৃতের দাবি কতটা সত্যি, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিস। পরে তাদের আর কী কী পরিকল্পনা ছিল, সেটাও জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। বাকিরা ধরা পড়লে পুরো বিষয়টি স্পষ্ট হবে বলে মনে করছে পুলিস। টাকার প্রসঙ্গে ধৃতের দাবি, প্রথমে ১০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু শেষে ২৫০০ টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু কোনও টাকা-ই সে পায়নি বলে দাবি তার। সেই সত্যতাও যাচাই করছে পুলিস।