• মুঠোলক্ষ্মী পুজোয় মাতলেন রামপুরহাটের কৃষকরা
    বর্তমান | ১৭ নভেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: কার্তিক সংক্রান্তির দিনে মুঠোলক্ষ্মী পুজোয় মেতে উঠলেন রামপুরহাট মহকুমার চাষিরা। শুক্রবার সকালে মাঠ থেকে আড়াই মুঠো ধান কেটে এনে বাড়ির উঠোনের পবিত্র স্থানে রেখে পুজো করা হয়। খেতের সোনালি ফসল গোলায় তোলার আগে যাতে কোনও বিপত্তি না ঘটে, সেজন্য প্রাচীনকাল থেকে এই পুজো হয়ে আসছে।


    বীরভূমের ৭৫শতাংশ মানুষের জীবিকা কৃষিকাজ। ফি বছর শ্রাবণ মাসের শুরুতে প্রবল বৃষ্টির সময় জমি চাষের উপযোগী হয়ে ওঠে। তখন কৃষকরা জমিতে ধানের বীজ ছড়িয়ে দেন। কিছুদিন পর মাঠের পর মাঠ সবুজে ভরে ওঠে। কোজাগরি লক্ষ্মীপুজোয় সেই ধানের শিষে সোনালি রং লাগে। চাষিরা বুঝে যান, এবার সুদিন আসছে। শুরু হয়ে যায় নবান্ন উৎসবের প্রস্তুতি। নবান্নের আগে অগ্রহায়ণের প্রথম দিনে কার্তিক সংক্রান্তিতে চাষিরা নিজনিজ বাড়িতে মুঠোলক্ষ্মী পুজো করেন।


    এদিন সকালে চাষি পরিবারের পুরুষরা স্নান সেরে কাস্তে হাতে নিজনিজ জমিতে যান। সেখানে দেবী লক্ষ্মীর কাছে মনস্কামনা জানিয়ে আড়াই মুঠো ধান কেটে একটি কাপড়ে জড়িয়ে বাড়ি ফেরেন। বাড়ির দরজায় দাঁড়িয়ে থাকেন মহিলারা। পুরুষরা ফিরতেই তাঁদের একটি কাঠের পিঁড়িতে দাঁড় করানো হয়।  মঙ্গলঘটের জল দিয়ে কৃষকের পা ধুইয়ে কাপড়ের আঁচল দিয়ে মুছিয়ে দিয়ে দেবীকে ঘরে আহ্বান করেন গৃহকর্ত্রী। এরপর মুঠো ধান গোবর লেপা পবিত্র জায়গায় রেখে লক্ষ্মীর আরধনা করা হয়।


    রামপুরহাটের চাষি দীপককুমার ভকত, ময়ূরেশ্বরের মীরপুর গ্রামের অভিজিৎ সরকার, পার্থ মণ্ডলরা জানান, গোলাভরা ধান মানেই সমস্ত ঋণের অবসান। সারা বছরের পরিবারের দু’মুঠো ভাত খাওয়ার চিন্তা দূর। কিন্তু সেই ধান গোলায় তোলার আগে যাতে কোনও বিপত্তি না হয়, সেজন্যই বংশপরম্পরায় মুঠোলক্ষ্মীর পুজো হয়ে আসছে। 


    (মুঠোলক্ষ্মী পুজো উপলক্ষ্যে মাঠ থেকে এক মুঠি ধান কেটে ফিরছেন মীরপুরের এক চাষি। -নিজস্ব চিত্র)
  • Link to this news (বর্তমান)