• জলপাইগুড়ি-শিলিগুড়িতে সদস্য সংগ্রহ করতে হোঁচট খাচ্ছে বিজেপি  
    বর্তমান | ১৭ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি ও সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: লোকসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে উত্তরবঙ্গ ছিল বিজেপির গড়। তবে হালে সেখানেও তাদের পায়ের তলার মাটি আলগা হচ্ছে। সেই কারণেই নতুন সদস্য করতে গিয়ে গুরুতর হোঁচট খাচ্ছে গেরুয়া শিবির। উত্তরবঙ্গে বিজেপির প্রধান দুই সাংগঠনিক জেলা শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়িতে নতুন সদস্য খুঁজে পাচ্ছে না বিজেপি। মানুষের মধ্যে বিজেপির সদস্য হওয়ার ব্যাপারে বিন্দুমাত্র  কোনও উৎসাহ নেই। ২৭ অক্টোবর থেকে নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু করেছে বিজেপি। দলের দুই সাংগঠনিক জেলায় সাকুল্যে ৫০ হাজার সদস্যও নাম লেখাননি বলে খবর বিজেপি সূত্রে। বলা বাহুল্য, জলপাইগুড়ির ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা দু’লক্ষ এবং শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলার ক্ষেত্রে তা এক লক্ষ।


    নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযানে নেমে শিলিগুড়িতে নিঃসন্দেহে ধাক্কা খাচ্ছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশমতো শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলায় এখনও ২০ হাজারের বেশি নতুন সদস্য নথিভুক্ত হয়নি। একদা গেরুয়া গড়ে মানুষের এই অনীহায় বিজেপির প্রতি ব্যাপক অনাস্থার দিকটি প্রকাশ পাচ্ছে বলে জেলা নেতৃত্বের একাংশের ধারণা।


    শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলায় তিন বিধায়ককে ন্যূনতম ৩ হাজার নতুন সদস্য সংগ্রহ করতে হবে। এছাড়া শিলিগুড়ি পুরসভার নির্বাচিত কাউন্সিলার ও যাঁরা পুর প্রতিনিধি পদে প্রার্থী হয়েছিলেন তাঁদের ন্যূনতম এক হাজার করে নতুন সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, এখনও বিধায়কদের মধ্যে শঙ্কর ঘোষ এবং কাউন্সিলারদের মধ্যে অমিত জৈন কিছু সদস্য সংগ্রহ করলেও বাকিরা অনেকটাই পিছিয়ে। কেউ কেউ  আবার নতুন সদস্য সংগ্রহ শুরু করেই উঠতে পারেননি। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্ব যথেষ্ট চাপের মধ্যে পড়েছে। শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অরুণ মণ্ডল বলেন, মাঝে  উৎসবের দিন পড়ে যাওয়ায় মানুষ সেভাবে এগিয়ে আসতে পারেননি। উৎসব মিটে গিয়েছে,  মানুষ এবার বিজেপির সদস্য হওয়ার জন্য  সাড়া দিচ্ছেন। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবেই।


    অন্যদিকে, জলপাইগুড়ি জেলায় লক্ষ্যমাত্রা দু’লক্ষ। সেখানে এখনও পর্যন্ত মাত্র ৩০ হাজার নতুন সদস্য নাম লিখিয়েছে। বেশিরভাগ নেতাই ছুটির মুডে। ফলে বুথে বুথে মুখ থুবড়ে পড়েছে সদস্য সংগ্রহ অভিযান। এনিয়ে শনিবার বৈঠকে জেলা নেতৃত্বকে রীতিমতো ধমক দিলেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা ফালাকাটার বিধায়ক দীপক বর্মন। বৈঠকে ছিলেন বিজেপির জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায়। আজ, রবিবার থেকেই বুথে বুথে সদস্য সংগ্রহ অভিযানে গতি আনার নির্দেশ দিয়েছেন দীপকবাবু।


    জেলা সভাপতিকে স্পষ্টভাষায় তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, যদি মণ্ডল কমিটির সভাপতি সদস্য সংগ্রহের কাজে গুরুত্ব না দেন, সেক্ষেত্রে অন্য কাউকে দায়িত্ব দিতে হবে। প্রয়োজনে সেই মণ্ডল সভাপতিকে সরিয়ে দিতেও দল পিছপা হবে না। বৈঠক শেষে সাংসদ বলেন, কর্মীদের মাঠে নামতে বলেছি। পুজো গেল। ধান কাটা চলছে। এসময় লোক একটু কম পাওয়া যায়। তবুও সদস্য সংগ্রহে ঝাঁপাতে বলা হয়েছে প্রত্যেককে।
  • Link to this news (বর্তমান)