একই নম্বরের একাধিক ভোটার কার্ড! চাঞ্চল্য, গাফিলতি কাদের, খুঁজছে কমিশন
বর্তমান | ১৭ নভেম্বর ২০২৪
সৌম্যজিৎ সাহা: বাংলাদেশ লাগোয়া উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ থেকে শুরু করে নেপাল সীমান্ত ঘেঁষা দার্জিলিংয়ের নকশালবাড়ি—একই নম্বরের একাধিক ভোটার কার্ডের হদিশ পেয়েছে নির্বাচন কমিশন। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন তারা। চিহ্নিত হয়েছে রাজ্যের এমন ১১টি বিধানসভা কেন্দ্র, যেখানে অতীতেও বাংলাদেশ বা নেপালের নাগরিকদের ‘ভারতীয়’ সেজে থাকার প্রমাণ মিলেছে। এই বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতেই রয়েছে একই নম্বরের একাধিক ভোটার কার্ড। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এরকম কার্ডের সংখ্যা ২৩ হাজারেরও বেশি! বিষয়টি নিছক ভুল, নাকি বিদেশিদের ‘ভারতীয়’ সাজিয়ে রাখার নেপথ্যে কোনও অসাধু চক্রের কারসাজি রয়েছে, খতিয়ে দেখছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন।
কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, সীমান্ত লাগোয়া যে দু’টি বিধানসভায় একই নম্বরের একাধিক ভোটার কার্ড মিলেছে, তার একটি বাংলাদেশ সংলগ্ন বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্র। অন্যটি নেপালের পানিট্যাঙ্কি লাগোয়া মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি। ওই সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, রিপিটেড এপিক বা একই নম্বরের একাধিক ভোটার কার্ড সবচেয়ে বেশি রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ পশ্চিম, মধ্যমগ্রাম, রাজারহাট-নিউটাউন, রাজারহাট-গোপালপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং পূর্ব, বারুইপুর পূর্ব ও পশ্চিম, আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটা, দার্জিলিং জেলার কার্শিয়াং, শিলিগুড়ি এবং মাটিগাড়া- নকশালবাড়ি বিধানসভা এলাকায়। এক্ষেত্রে অবশ্য শীর্ষস্থান দখলে রেখেছে মাটিগাড়া- নকশালবাড়ি। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছুদিন আগে থেকে ভোটার কার্ড সংশোধনের কাজ শুরু হয়েছে। আগামী দেড় মাসের বেশি সময় ধরে চলবে এই কাজ। যেসব জায়গায় এমন ভোটার কার্ডের অস্তিত্ব রয়েছে, সেখানে কার্ডগুলি ভালোভাবে যাচাই করে সংশোধনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কীভাবে এত ভোটার কার্ড তৈরি হল, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। স্থানীয় স্তরে বুথ লেভেল অফিসারদের কোনও গাফিলতি রয়েছে কি না, খুঁজে দেখছে কমিশন। যেসব বিধানসভায় রিপিটেড এপিকের সংখ্যা অনেক বেশি, সেই সব জায়গার বিশেষ তাৎপর্যও রয়েছে। অনুপ্রবেশকারীরা এসে এসব এলাকায় ঘাঁটি গেড়ে থাকছে—এমন তত্ত্ব আগেও বহুবার উঠে এসেছে। যেমন, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং পূর্ব বা বারুইপুরের পূর্ব ও পশ্চিম বিধানসভা। এই তিন জায়গাতেই মায়ানমারের রোহিঙ্গারা এসে বসবাস করছে বলে অভিযোগ। তাদের কেউ কেউ এমন ভোটার কার্ড বানিয়ে ‘ভারতীয়’ সেজেছে কি না, তাও খতিয়ে দেখার তালিকায় রেখেছে কমিশন।