• পুড়ল গুদাম, ঘরছাড়া ১৮ পরিবার
    বর্তমান | ১৭ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ভয়াবহ আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল নিমতলা এলাকায় মহর্ষি দেবেন্দ্র রোডের কাঠের গোলা। শুক্রবার রাত ২টো নাগাদ আগুন লাগে। কাঠের গোলা থেকে পাশের বস্তিতেও আগুন ছড়িয়ে যায়। ঘরছাড়া হতে হয়েছে ১৮টি পরিবারকে। সবকিছু ভস্মীভূত হয়ে যাওয়ায় এক কাপড়ে ঘরছাড়া হতে হয়েছে তাদের। দমকলের ২০টি ইঞ্জিনের চার থেকে পাঁচ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু আগুনের তীব্রতা এতটাই ছিল যে শনিবার সকালেও ধ্বংসস্তূপ থেকে ধিকি ধিকি আগুন বেরতে দেখা যায়। তবে এই ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর নেই। রাতেই ঘটনাস্থলে চলে আসেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। তিনি দাঁড়িয়ে থেকে আগুন নেভানোর কাজ তদারকি করেন। অগ্নিকাণ্ডের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। প্রাথমিক অনুমান, শট সার্কিট থেকে আগুন লাগে। তারপর গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হলে আগুন ভয়াবহ আকার নেয়। সকালে ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় বিধায়ক শশী পাঁজা। 


    কাঠের গোলায় আচমকা আগুন দেখতে পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারাই দমকলে খবর দেন। তার মধ্যেই গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। সেই সঙ্গে রাতে গঙ্গার দিক থেকে হাওয়ার গতিবেগও যথেষ্ট ছিল। সেই কারণেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে দ্রুত। স্থানীয় বাসিন্দা সুভাষ রাজভড়, বিকাশ সরোজ বলেন, ‘গোডাউনের ভিতর থেকে আমরা বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাই। দমকল এবং ডিএমজি কর্মীরা যুদ্ধকালীন তৎপরতায় আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালান।’ তবে তাঁরা জানিয়েছেন, এই এলাকায় কাঠের গোডাউনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নতুন নয়। এবার আগুন আশপাশের বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ায় বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ঘরছাড়া সুভাষ সরোজ, অনিতা পাসিরা বলেন, ‘টাকাপয়সা, গয়নাগাটি, বাচ্চাদের বইখাতা সব পুড়ে গিয়েছে। একটি নয়, দু’টি ঘরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়েছে।’ 


    মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঘটনাস্থলেই ছিলেন দমকলমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘দমকল তৎপরতার সঙ্গে কাজ করায় আগুন খুব বেশি ছড়ায়নি। কিন্তু ভিতরে কাঠ মজুত থাকায় আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লেগেছে।’ এই ঘটনায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে তাঁর। তিনি জানান, বিধায়ক শশী পাঁজা এবং কাউন্সিলারদের নিয়ে তিনি আগেও মিটিং করেছেন। তখন বেশ কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল এখানকার ব্যবসায়ীদের। সেগুলি যথাযথভাবে মেনে চলা হয়নি। কাঠের গোডাউনের মধ্যেই গ্যাস সিলিন্ডারে রান্না হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও কেন কেউ তৎপর হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সুজিতবাবুর আরও দাবি, আগুন নেভাতে গিয়েও হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে দমকলকর্মীদের। তাই তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘এরপর আমি আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব। কর্মরত অবস্থায় কর্মীদের আঘাত করলে আমি মেনে নেব না।’ স্থানীয় ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার মীরা হাজরা বলেন, ‘ঘরছাড়াদের আপাতত কমিউনিটি হলে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছি।’
  • Link to this news (বর্তমান)