• সিসি ক্যামেরা নজরদারিতে সংস্কার ভূগর্ভস্থ নিকাশির, বরাদ্দ ৫৬ লক্ষ,  বরানগরে কারচুপি রুখতে পদক্ষেপ নগরোন্নয়ন দপ্তরের
    বর্তমান | ১৭ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: সামান্য বর্ষা হলেই হাঁটুসমান জল দাঁড়িয়ে যায়। আশপাশের বাড়ি ও দোকানে জল ঢুকে যাওয়ায় নরক যন্ত্রণা পেতে হয় বাসিন্দাদের। নর্দমার নোংরা জলে লণ্ডভণ্ড অবস্থা হয় বরানগরের এ কে মুখার্জি রোডের। এই সমস্যা থেকে এলাকাবাসীকে রেহাই দিতে ওই রাস্তার নীচ দিয়ে যাওয়া নিকাশি সংস্কারে উদ্যোগী হয়েছে নগোরন্নয়ন দপ্তর। দীর্ঘদিন পরিষ্কার না হওয়া নিকাশি সাফাইয়ের জন্য প্রায় ৫৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে তারা। তবে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, সম্পূর্ণ কাজটি করতে হবে সিসিটিভি নজরদারির আওতায়। ড্রেনের মধ্যে জমে থাকা আবর্জনা বা পলি সম্পূর্ণ তুলে ফেলা হচ্ছে কি না, সেদিকে কড়া নজর রাখবে কর্তৃপক্ষ। পুরসভার আশ্বাস, আগামী বর্ষার আগেই এই কাজ সম্পন্ন হবে। কমবে মানুষের দুর্ভোগ। 


    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বি টি রোড থেকে এ কে মুখার্জি রোড বরাবর ভূগর্ভস্থ নিকাশিনালা তৈরি করা হয়েছিল ১৯৭৪ সালে। ১,৬০০ এমএম ডায়ার সেই পাইপলাইন দীর্ঘদিন পরিষ্কার করা হয়নি। সংস্কারের অভাবে একাধিক গালিপিট বসে গিয়ে বেশ কিছু জায়গায় নিকাশি অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। বছর খানেক আগে কেএমডিএ এবং পুরসভার তরফে যৌথ পরিদর্শন হয়েছিল। তখনই জানা গিয়েছিল, বিভিন্ন জায়গায় ম্যানহোল কাদা ও আবর্জনায় পুরোপুরি অবরুদ্ধ হয়ে রয়েছে। তাই সামান্য বর্ষাতেও বরানগর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল থেকে বঙ্গলক্ষ্মী বাজার পর্যন্ত জল দাঁড়িয়ে যায়। বেশি বৃষ্টি হলে যোগদা আশ্রম, ধর টিন ফ্যাক্টরি ও ৩৪সি বাস টার্মিনাসের সামনের এলাকা হাঁটু থেকে কোমরসমান জলের তলায় চলে যায়। সম্প্রতি রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর এই নিকাশি সংস্কারের জন্য কেএমডিএ-কে প্রশাসনিক অনুমোদন দিয়েছে। বরাদ্দ করা হয়েছে ৫৫লক্ষ ৬৯ হাজার ৮০৩ টাকা। টাকা খরচ হয়ে গেল, কিন্তু কাজের কাজ হল না—এরকম পরিস্থিতি এড়াতেই সিসিটিভি বসিয়েই কাজ হবে। বরানগর পুরসভার সিআইসি অঞ্জন পাল বলেন, ‘একটি স্ট্যান্ডে আলো ও সিসিটিভি নামিয়ে ভূগর্ভস্থ নিকাশিতে কাজ করতে হবে। অনেক সময় এক্ষেত্রেও কারচুপি বা ফাঁকির অভিযোগ থাকে। তাই আমরা বিষয়টি অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলার কথা জানিয়ে দিয়েছি। সরকারি নির্দেশেও সিসিটিভি নজরদারির বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। এই কাজ শেষ হলে অন্তত ছ’টি ওয়ার্ডের মানুষ উপকৃত হবেন।’   


    জানা গিয়েছে,  টবিন রোডের মুখ থেকে এ কে মুখার্জি রোড হয়ে ওই ভূগর্ভস্থ নিকাশি তালবাগান পাম্পিং স্টেশনে যাচ্ছে। সেখানে পাম্পের মাধ্যমে জল ফেলা হচ্ছে বাগজোলা খালে। ওই পাইপলাইনই বর্তমানে আবর্জনায় অবরুদ্ধ। এছাড়া, বি টি রোডের পশ্চিম প্রান্তের জল টবিন রোড মোড়ে বি টি রোড ছাপিয়ে এ কে মুখার্জি রোডে ঢোকে। ভারী বৃষ্টি চললে পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে ওঠে। পুরসভার এক আধিকারিক বলেন, ‘৫০ বছর আগে ওই ভূগর্ভস্থ ড্রেন তৈরির সময় এলাকায় যত মানুষ বসবাস করতেন, এখন তা অন্তত ২০ গুন বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ওই পাইপলাইন পরিষ্কার থাকলেও এলাকার সব জল সেখান দিয়ে বেরনো সম্ভব নয়। তবে ড্রেনের মধ্যে জমে থাকা কাদা, মাটি ও আবর্জনা তুলে ফেললে জম জমলেও নেমে যাবে দ্রুত।’ 
  • Link to this news (বর্তমান)