ঘটনাটি ঠিক কী? কয়েক দিনে আগে শিয়ালদহের বৈঠকখানা ৫টি বন্দুক ও ৯০ রাউন্ড-সহ এক ব্যক্তিকে আটক করেছিল কলকাতা পুলিসের এসটিএফ। এরপর শুক্রবার কসবা নিজের বাড়িতে সামনেই আক্রান্ত হন তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষ। ভরসন্ধেয় তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর চেষ্টা করে দুই দুষ্কৃতী। কিন্তু কোনওকারণে বন্দুক থেকে গুলি বেরোয়নি। সেই ঘটনার পর হাতেনাতে পাকড়াও করা হয় ১ জনকে। তাঁর কাছে পাওয়া যায় আগ্নেয়াস্ত্র। পরে মূল অভিযুক্ত-সহ আরও ২ ধরা পড়ে।
কসবাকাণ্ডে পুলিসের ভূমিকায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেছিলেন, 'এনাফ ইজ এনাফ। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলেছেন পুলিস য়ে অস্ত্র উদ্ধার কর। আন্তঃরাজ্য অপরাধীদের আটকাও। তারপরেও হা করে বসে থাকা যাবে না। পুলিসকে বলব, অ্য়াক নাউ। মুখ্যমন্ত্রীর বলার পরেও কেন অস্ত্র ঢুকছে? কী করে অস্ত্র ঢুকছে? গোয়েন্দারা কোথায়? নেটওয়ার্ক কোথায়? প্রত্যেকটা গ্রেফতার আমি দেখছি যে. বাইরের অপরাধী এখানে গ্রেফতার হচ্ছে। এত বাইরের অপরাধী আসছে কী করে? নেটওয়ার্ক কোথায়? বারবার মুখ্যমন্ত্রী বলছেন! মুঙ্গের থেকে অস্ত্র! মুঙ্গের থেকে অস্ত্র ধরার জায়গা কর'। এবার শুরু হল নাকা চেকিং।
বিজেপি নেতা সজল ঘোষের কটাক্ষ, 'দুদিন নাকা তল্লাশি করলে কী সব আসামীকে ধরে নেওয়া যাবে? বাইরে থেকে যারা অস্ত্র আনছে, তাঁদের ধরে ফেলা যাবে? একথা শুনলে তো বাচ্চা ছেলেরাও হাসবে! আসামীরা তৃণমূল নেতাদের গাড়িতে চড়ে ঘুরে বেড়ায়। তাঁদের কে ধরতে গেলে যে নেটওয়ার্ক লাগবে, সে নেটওয়ার্ক পুলিস বা পুলিসমন্ত্রী কারই নেই। সেই মানসিকতাও নেই। এখন ঘটনা ঘটেছে তাই একটু আইওয়াশ করে, চিত্কার চেঁচামিচি করে দিলেন, মেয়রের একটা ইমেজ তৈরি হল যে তিনি কাউন্সিলরদের নিয়ে কত চিন্তিত'!
কংগ্রেস নেতা সৌম্য আইচ বলেন, 'চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে। এতদিন রাজ্যের এই অবস্থা। অপরাধীরা কার্যত অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই ঘটনার সম্বিত্ ফিরেছে, সম্বিত্ ফিরলে ভালো। কিন্তু কলকাতা পুলিসের রুটিন কাজ তো আগে করাই উচিত ছিল'। তাঁর আরও বক্তব্য, 'কলকাতা পুলিস, তার গোয়েন্দা ব্যর্থ ফিরহাদবাবু বলেছেন। ব্য়র্থতা দায়, যে তিনি অঙ্গুলি নির্দেশ করছেন, সেটা তো কলকাতা পুলিস নয়। তার মাথা হচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেটাতো পরিষ্কার করা দরকার তাহলে কি মুখ্যমন্ত্রী কোথায় ব্যর্থ হচ্ছেন? পুলিস ব্যর্থ হচ্ছে'?
তৃণমূল নেতা অরূপ চক্রবর্তীর পাল্টা দাবি, নাকা তল্লাশিতে অসুবিধা হওয়ার কথা সমাজবিরোধীদের। নাকা তল্লাশিতে যদি অসুবিধা হয় বিরোধীদের, তাহলে বুঝতে হবে বিরোধীরা এসব কাজে মদত দেয়। ফিরদাহ হাকিম বলেছেন কি বলেননি, তার থেকে বড় কথা পুলিসের কাজ নাকা তল্লাশি করা যাতে অপরাধ হওয়ার আগে আটকানো যায়। পুলিস সেই কাজ করছে, তাতেও বিরোধীদের গাত্রদাহ'!