সংবাদদাতা, রামপুরহাট: ‘সচেতন হওয়ার সময় এসে গিয়েছে। ছাব্বিশের নির্বাচনেও যদি ভালো ফল না করতে পারেন তাহলে আপনাদের অক্ষমতার স্ট্যাম্প পড়ে যাবে যে, আপনার দ্বারা হচ্ছে না।’ রবিবার রামপুরহাট-১ ব্লক ও শহরের বুথ সভাপতিদের নিয়ে সম্মেলনে এভাবেই সতর্ক করলেন তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়। এদিন রামপুরহাটে বুথ সভাপতিদের নিয়ে সম্মেলনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিল তৃণমূল।
এর আগে বিধানসভা বা লোকসভা নির্বাচন, অধিকাংশ বুথেই খারাপ ফল হয়েছে তৃণমূলের। বিরোধীরা এগিয়ে রয়েছে। অথচ উন্নয়নের কোনও ঘাটতি নেই। পর্যালোচনায় নেমে দল জানতে পারে, দলীয় নেতৃত্বের একাংশ নিষ্ক্রিয় রয়েছে। কেউ কেউ আবার দু’নৌকায় পা দিয়ে চলায় এই ফল। দলের জেলা চেয়ারম্যান আশিসবাবু আগেই ঘোষণা করেছিলেন, বুথ সভাপতিদের অনেকেই আছেন যাঁরা পদে থেকেও নিষ্ক্রিয়, কোনও বুথ সভাপতি আবার পঞ্চায়েত সদস্য হয়েছেন, বুথে সময় দিতে পারছেন না। তাঁদের সরিয়ে নতুন কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। যাঁকে সরানো হবে তাঁকে অঞ্চল কমিটিতে স্থান দেওয়া হবে। এদিন সম্মেলনে কাদের সরানো হবে সেব্যাপারে প্রস্তাব নেওয়া হয়। এরপরই আশিসবাবু অঞ্চল ধরে ধরে কোন কোন বুথে পিছিয়ে এবং এগিয়ে সেই তথ্য তুলে ধরেন। কোন বুথ সভাপতি, পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান অনুপস্থিত তা জেনে নেন। বক্তব্য রাখতে গিয়ে শতাব্দী বলেন, সচেতন হওয়ার সময় এসে গিয়েছে। নেতা হতে গেলে আপনাকে প্রমাণ দিতে হবে। বিচার হবে ভোটের ফলাফল দিয়ে। ভোটে ভালো ফল করলে, দল যে ক্ষমতা আপনাকে দিয়েছে সেটা মেনে নেওয়া হবে। এখনও সময় আছে। পিছিয়ে থাকা জায়গা থেকে এগতে হলে এখন থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ুন। কী করলে ভালো হবে সেক্ষেত্রে আমাদের কী ধরনের সহযোগিতা প্রয়োজন সেটা দলকে জানান। পাশাপাশি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তিনি বলেন, আগামী বিধানসভা নির্বাচনেও আগের চেয়ে বেশি বিধায়ক আমরা পাব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ফের স্বমহিমায় আসবে। এটা মিলিয়ে নেবেন।
আশিসবাবু বলেন, অপরের কাছে সাধু হওয়া সহজ। কিন্তু নিজের মনের কাছে সাধু হওয়া কঠিন। অর্থাৎ প্রতিজ্ঞা করুন কাজ করতে গিয়ে একজনেরও কাছ থেকে এক কাপ চা খাবেন না। বাঁ হাত দিয়ে টাকা নেওয়া তো দূর। দেখবেন অনেকটা স্বচ্ছতা আসবে। আমাদের এই স্বচ্ছতার বিষয়টি মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে। দলমত নির্বিশেষে মানুষের কল্যাণে কাজ করুন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ে প্রতিটি প্রকল্প সর্বসাধারণের জন্য। এদিন সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে শতাব্দী বলেন, বীরভূমের সবচেয়ে খারাপ ফল হচ্ছে রামপুরহাটে। অথচ এখানে সাংসদ, বিধায়ক, পুরসভা, পঞ্চায়েত, জেলা পরিষদ ছাড়াও টিআরডিএর মাধ্যমে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে ও হচ্ছে। সেই বিশ্লেষণ কর্মীদেরই করতে হবে। কোর কমিটির বৈঠকের পর কেষ্ট কাজলের দ্বন্দ্ব ow কমবে? উত্তরে সাংসদ বলেন, ভিতরে বাইরে যা দ্বন্দ্বই থাকুক না কেন, দলের স্বার্থে সব সম্পর্কই ভালো হয়। দলের জন্য সবাই কাজ করে। ওঁরাও তাই করবেন।