পলিহাউসে শাকসব্জি চাষ করে লাভবান ইলামবাজারের সঞ্জীব
বর্তমান | ১৮ নভেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: শুখা আবহাওয়ার জেলা বীরভূমের প্রধান ফসল ধান। ফলে প্রতিবছরই প্রকৃতির মুখাপেক্ষী হয়ে থাকেন চাষিরা। আবহাওয়া বিরূপ হলে মাঝেমধ্যে চাষিদের ভালোরকম ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। তাই গতানুগতিক ধানচাষ ছেড়ে পলিহাউসিং পদ্ধতিতে সারা বছর সব্জি ফলিয়ে রোজগারের পথ দেখাচ্ছেন ইলামবাজারের যুবক সঞ্জীব ভালুক। গরমকালে বাজারে ধনেপাতা, পালংয়ের জোগানদার তিনি। দিনদিন জলস্তর নামতে থাকায় বীরভূমে এই বিকল্প চাষের গুরুত্ব আরও বাড়তে পারে-এমনটাই মনে করছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা।
ইলামবাজারের উষহার গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জীববাবু গত বছর ১০ কাঠা জমিতে লোহার পাইপ দিয়ে পলিহাউসিং করেছিলেন। পলিথিনের ছাউনির নীচে মাটি তৈরি করে সেখানে ধনেপাতা, পালং শাক, টম্যানো ও বেগুন চাষ করেন। সাধারণত বীরভূমে গ্রীষ্ম ও বর্ষায় এসব সব্জি চাষ হয় না। কিন্তু পলিহাউসিং পদ্ধতিতে চাষ করায় ব্যাপক ফলন হয়। বৃষ্টিতে সব্জির ক্ষতি হয়নি। রোগপোকার আক্রমণও ছিল নগণ্য।
বাজারে অসময়ে এসব সব্জি জোগান দিয়ে সঞ্জীববাবুর ভালো লাভ হয়েছিল। দুর্গাপুজোর আগে ধাপে ধাপে পালং শাক বিক্রি করে প্রায় ৪০ হাজার ঘরে তুলেছেন। চাষ করতে খরচ হয়েছিল মাত্র ১০ হাজার টাকা। ধনেপাতার ক্ষেত্রেও ৩০-৩৫ হাজার টাকা তিনি ঘরে তুলেছেন।
সঞ্জীববাবুর এই উদ্যোগে পাশে দাঁড়িয়েছে জেলা উদ্যানপালন দপ্তর। ওই দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর সুফল মণ্ডল বলেন, সঞ্জীব খুবই ভালোভাবে পলিহাউসিং পদ্ধতিতে চাষ করছেন। এবার প্রায় দুই বিঘার বেশি জমিতে সব্জি চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন। তাতে ওঁর লাভের পরিমাণও অনেকটাই বাড়বে বলে মনে হচ্ছে। অন্য চাষিদেরও পলিহাউসিং পদ্ধতিতে চাষে এগিয়ে আসতে বলব।
উদ্যানপালন দপ্তর জানিয়েছে, তারা চাষিদের নানাভাবে সাহায্য করে। নিত্যনতুন পদ্ধতিতে চাষের খরচে ভর্তুকি দেয়। কিছুক্ষেত্রে আম, লেবু, পেয়ারা, ড্রাগন ফল চাষের জন্য চারাও দেয়। প্লাস্টিক মালচিং, কেঁচোসার উৎপাদন, জারবেরা চাষ, পলিহাউস তৈরি, হাইব্রিড সব্জি ও মাশরুম চাষে মোটা টাকা ভর্তুকি দেয় প্রশাসন। কোনও কোনও ক্ষেত্রে সমস্ত খরচের ৫০ শতাংশই দপ্তর বহন করে। এজন্য দপ্তরে নির্দিষ্টভাবে আবেদনপত্র জমা করতে হয়। সঞ্জীববাবু বলেন, আমি ইউটিউব ও সোশ্যাল মিডিয়ায় এভাবে সব্জিচাষ করা দেখেছিলাম। তারপর প্রশাসনের সাহায্য নিই। অসময়ে সব্জি চাষ করে ভালো লাভ পেয়েছি। বাকিদেরও এই বিকল্প চাষে এগিয়ে আসতে বলব।