নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: পাড়ুইয়ে ব্যবসায়ীকে অপহরণের ঘটনায় গাড়ির চালককে গ্রেপ্তার করল পুলিস। ধৃতের নাম পথিক ধীবর। তার বাড়ি দুবরাজপুরের দৌলতপুর গ্রামে। এছাড়া, ঘটনার দিন রাতেই গ্রেপ্তার হওয়া অপহরণকারী দলের সদস্য মুর্তোজ খানের সূত্র ধরে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হল কার্তুজ সহ একটি আগ্নেয়াস্ত্র। পুলিসের দাবি, অপহরণকারী দুবরাজপুরের এই স্থানীয় গ্যাংটিতে বেশ কয়েকজন দাগী দুষ্কৃতী ছিল। তাদের খোঁজেই তল্লাশি চালাচ্ছে জেলা পুলিস।
গত শুক্রবার রাতে পাড়ুই থানার মহুলারার বাসিন্দা অটোমোবাইল পার্টসের ব্যবসায়ী শেখ আজাহারুদ্দিনকে অপহরণ করে একদল দুষ্কৃতী। ওই ব্যবসায়ীকে অপহরণের ছক করে খোদ তাঁর কাছেই দীর্ঘবছর ধরে কাজ করা শেখ তাজিম। তার বাড়ি দুবরাজপুরেই। তাজিমই ওইদিন সন্ধ্যাবেলায় চা খাওয়ার নাম করে ব্যবসায়ীকে বাজার থেকে অন্যদিকে নিয়ে গিয়েছিল। তারপর একটি গাড়িতে তুলে ৬ জন মিলে তাঁকে মুখে কাপড় বেঁধে দিয়ে দুবরাজপুরের জঙ্গলে নিয়ে যায়। সেখান থেকেই ৫০ লক্ষ টাকার মুক্তিপণ দাবি করে বাড়িতে ফোন করা হয়। পরে পুলিসি তৎপরতায় ওইদিন রাতেই পুলিস অপহৃত ব্যবসায়ীকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ব্যবসায়ীর পরিবারের কাছে যে মোটা টাকা রয়েছে তা আগেই জানত তাজিম। ওই ব্যবসায়ীর বাবা রেশন ডিলার। পরিবারটি মোটের উপর বিত্তবান। পাশাপাশি সে এটাও জানত, হয়তো ভয় দেখালে মোটা টাকা দিয়ে দেবে আজাহারুদ্দিন। সেই কারণে সে দুবরাজপুরের একটি গ্যাংয়ের ৬ জনকে ঠিক করে। টাকার ভাগ তাদের সবাইকে দেবে এই বলে গাড়ি, আগ্নেয়াস্ত্র সবকিছু সে ঠিক করেই রাখে। ওইদিন গাড়ির পিছনে পিছনে বাইকে তাজিম ছিল বলে দাবি ওই ব্যবসায়ীর। সেদিন রাতেই পুলিস একজনকে গ্রেপ্তার করে। তাকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর শনিবার রাতে ধৃতকে নিয়ে ঘটনাস্থল ও বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালায় পাড়ুই ও দুবরাজপুর থানার পুলিস। সেই সূত্র ধরেই পুলিস গাড়ির চালক পথিক ধীবরকে গ্রেপ্তার করে। ব্যবসায়ীকে অপহরণে ব্যবহৃত কালো রঙের চারচাকা গাড়িটিও উদ্ধার হয় স্থানীয় স্ট্যান্ড থেকে। তবে তাজিম পলাতক বলে পুলিস জানিয়েছে।
সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, দুবরাজপুরের এই গ্যাংটি একাধিক অপরাধমূলক ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি সবকিছুই এরা আগে করেছে। এই দলে স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতারও যোগসাজশ মিলেছে। যদিও অভিযোগপত্রে তাঁর নাম নেই। পুলিস ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুরো গ্যাংটির নাগাল পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। পাড়ুই থানার এক অফিসার বলেন, এদিন একটি কার্তুজ, একটি ওয়ান শটার, চারচাকা গাড়ি ও একটি মোবাইল উদ্ধার হয়েছে। জেলা পুলিসের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা তদন্তের গতিপ্রকৃতির দিকে নজর রাখছেন। উদ্ধার হওয়া মোবাইল ফোনের কল ডিটেলস খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আশা করি খুব শীঘ্রই গ্যাংয়ের বাকি সদস্যরা ধরা পড়বে।