• শীতের শুরুতেই চিল্কিগড়ের কনক দুর্গামন্দির ও অরণ্যে পর্যটকদের ভিড়, আসছে পরিযায়ী পাখিরা
    বর্তমান | ১৮ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: শীত পড়লেই বেড়ে যায় অরণ্যের সৌন্দর্য। তার মধ্যে কয়েকটা মাস আনন্দে বসবাস করতে বহু দূর থেকে উড়ে আসে পরিযায়ী পাখির দল। সেই রূপটানে মজে উঠতে ছুটে আসেন পর্যটকরা। বাতাসে শীতের ছোঁয়া লাগতেই প্রতিবারের মতো এবারও চিল্কিগড় কনক অরণ্যে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে। চিল্কিগড় পশ্চিমবঙ্গের বৃহত্তম জীববৈচিত্র্যের উপবন। ঐতিহ্যবাহী কনক দুর্গামন্দির, পাশ দিয়ে বয়ে চলা ‘যুবতী’ ডুলুং নদী ও বহু ইতিহাসের সাক্ষী চিল্কিগড় রাজবাড়ি পর্যটকদের আকর্ষণের অন্যতম স্থল। 


    চিল্কিগড়ের দেবী কনক দুর্গা নিয়ে নানা লোকশ্রুতি আছে। চিল্কিগড় রাজবাড়ির কুল পুরোহিতরা বংশ পরম্পরায় মন্দিরে পুজো করেন। প্রশাসনের উদ্যোগে প্রাচীন মন্দিরের সংস্কার করা হয়েছে। মন্দির চত্বরে অতিথি নিবাস তৈরি করা হয়েছে। রাত্রি নিবাস তৈরির কাজ চলছে। প্রধান প্রবেশ গেট থেকে জঙ্গলের ভিতর দিয়ে হাঁটাপথে মন্দিরে পৌঁছতে হয়। বড় চাতাল পেরিয়ে মূল মন্দির। মন্দিরের পাশেই অতিথি নিবাস। পিছনে ভোগ রান্নার ঘর। মন্দিরের ডান পাশে শিশুদের জন্য খেলার পার্ক, বাম পাশ দিয়ে ডুলুং নদী বয়ে গিয়েছে। নদীর চারপাশ ঘিরে প্রায় ৬০ একর জায়গাজুড়ে জীববৈচিত্র্যের পার্ক। পার্কটি পশ্চিমবঙ্গের বৃহত্তম উপবন। পার্কে ৩৮৮টি প্রজাতির ভেষজ গুল্ম, গাছ সহ  ১০৫টি ঔষধি গাছ রয়েছে। 


    চিল্কিগড় রাজবাড়ি কিছুটা দূরে। রাজবাড়িতে বড় তোরণদ্বার পেরিয়ে প্রবেশ করতে হয়। মূল রাজপ্রাসাদ বহু ইতিহাসের সাক্ষী নিয়ে আজও দাঁড়িয়ে রয়েছে। বর্তমানে পর্যটকদের জন্য রাজবাড়িতে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। এইবছর শীতের মরশুমের শুরুতেই পর্যটকদের আসা শুরু হয়ে গিয়েছে। সোদপুরের বাসিন্দা পেশায় শিক্ষক ভাস্কর বসু বলেন, ঠান্ডার আমেজ পড়তেই পরিবার নিয়ে চিল্কিগড়ে বেড়াতে এসেছি। মন্দির, রাজবাড়ি, নদী ও অরণ্য ঘেরা এই জায়গার এক অন্য আকর্ষণ রয়েছে। আগেও এখানে বেড়াতে এসেছি। জনবসতি বেশি নেই। এখানে প্রকৃতি ও ইতিহাস মিলেমিশে এক ভালোলাগার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। কলকাতার বেহালার বাসিন্দা দেবী রায় বলেন,  দেবী কনক দুর্গার নানা মাহাত্ম্য শুনেছি। স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে এইবছর বেড়াতে এসেছি। এমন জায়গায় আসতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি চিন্ময়ী মারান্ডী বলেন, চিল্কিগড়কে পর্যটনস্থল হিসেবে গড়ে তোলার কাজ চলছে। মন্দির লাগোয়া অতিথি নিবাসটি পর্যটকদের জন্য দ্রুত খুলে দেওয়া হবে। পর্যটকরা এখানে বেড়াতে এসে বিশ্রাম নিতে পারবেন। রাত্রিনিবাস তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা শক্তিপদ রাউত বলেন, শীতের সময় পর্যটকদের এখানে ভিড় বাড়ে। কিছু সমস্যা আছে, সেগুলি দূর করতে পারলে পর্যটকদের ভালো লাগবে। মন্দির চত্বর সংলগ্ন পার্কটির এখনও বেহাল দশা। বোটিং চালু হয়নি। জীববৈচিত্র্য পার্কের রক্ষণাবেক্ষণও ঠিকমতো হয় না। স্থানীয় প্রশাসন এগুলির নজর দিলে আকর্ষণ আরও বাড়বে। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)