সংবাদদাতা, বানারহাট: চোখের কোনায় তখনও জল। কিন্তু শাবকের সাড়া নেই। নড়াচড়াও নেই। এভাবে একদিনের বেশি মৃত শাবককে আগলে রাখার পর রবিবার জঙ্গলে ফিরে গেল সেই মা হাতিটি। মৃত শাবক তখনও পড়ে। নিথর। মা হাতিটি ফিরতে স্বস্তি ফিরে পেলেন বনকর্মী এবং চা বাগানের বাসিন্দারা।
শনিবার বানারহাট ব্লকের কারবালা চা বাগানের নালায় পড়ে এই হস্তি শাবকের মৃত্যু হয়েছিল। শাবকের মৃত্যুর শোকে দিনভর পাহারা দেয় মা হাতি সহ হাতির দল। বনকর্মীরা মৃত শাবকটির দেহ উদ্ধার করতে গেলে হাতির আক্রমণের মুখে পড়েন। হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বনদপ্তরের গাড়ি। এতেও ক্ষান্ত থাকেনি হাতিটি। দেখতে আসা মানুষদের দিকেও তেড়ে আসে। বাধ্য হয়ে বনকর্মীরা বাধ্য হয়ে শনিবার রাতভর শাবকটি ও হাতির দলকে পাহারা দিয়ে রাখেন। রাতে হাতির দল শাবকটির মায়া ত্যাগ করে জঙ্গলে ফিরলে রবিবার বিকেলের পর শাবকটি উদ্ধার করে নিয়ে যান বনকর্মীরা।
মৃত শাবকটিকে মা হাতিটি সমাধিস্থ করার চেষ্টা করছিল। রাতের অন্ধকারে শাবকটিকে শুঁড়ে তুলে জঙ্গলের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিছুটা দূরে নিয়ে যাবার পর রাস্তার উপর দেহ রেখে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে হাতিটি জঙ্গলে ফিরে যায়। ফের হাতির দলটি শাবকের কাছে ফিরে এসে শাবকটি না পেয়ে ফের আক্রমণ হানতে পারে। সেই আশঙ্কায় রবিবার বিকেল অবধি পাহারা দিয়ে রাখেন বনকর্মীরা।
কারবালা চা বাগানের এক বাসিন্দা রোহন গোয়ালা বলেন, আগেই বনকর্মীরা মৃত শাবকটিকে তুলে নিয়ে গেলে মা হাতিটি সন্তানকে খুঁজতে চা বাগান লাগোয়া শ্রমিক মহল্লায় ঢুকে পড়তে পারে। তাই বিকেল অব্ধি পাহারা দেওয়া হয়েছে।
বনদপ্তর সূত্রে খবর, শাবকটি উদ্ধার করে লাটাগুড়ি প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রাতে যাতে হাতির দলটি লোকালয়ে হানা না দেয়, সেজন্য নজর রাখা হবে। নিজস্ব চিত্র।