• এন্টালিতে বন্ধ কারখানার ফ্লোর ভেঙে মৃত দুই নিরাপত্তারক্ষী 
    বর্তমান | ১৮ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রবিবার রাতে এন্টালির বন্ধ পরিত্যক্ত কারখানার ফ্লোর ভেঙে মর্মান্তিক মৃত্যু হল দুই নিরাপত্তা কর্মীর। পুলিস জানিয়েছে, মৃত সহিদুর রহমান ও মুজিবর রহমান সম্পর্কে দাদা-ভাই। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি উদ্ধারকাজও খতিয়ে দেখেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, আগেও এই কারখানার একাংশ ভেঙে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল। কিন্তু তার পরেও কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বন্ধ কারখানা বলে কর্তৃপক্ষও সংস্কারে উদ্যোগী হয়নি। সংস্কারহীন কারখানার মধ্যে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে নিরাপত্তাকর্মী ও কেয়ারটেকার থাকতেন। দুই নিরাপত্তা কর্মীর প্রাণের দায় কার, তা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর চর্চা।


    পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এন্টালি থানার উল্টোদিকে কনভেন্ট রোডে রয়েছে ৭০-৮০ বছরের পুরনো একটি অ্যাসিড কারখানা। পাঁচিল দিয়ে ঘেরা এই কারখানা বহু বছর ধরেই বন্ধ। তবে নিয়ম করে প্রত্যেক শিফ্টে কেয়ারটেকার ও নিরাপত্তাকর্মীরা থাকতেন। এদিন রাতেও দুই নিরাপত্তা কর্মী কারখানার মধ্যে ছিলেন। আচমকা তাঁরা কিছু একটা ভাঙার আওয়াজ পান। তাঁরা দেখেন সিঁড়ির একাংশ ভেঙে পড়েছে। তাঁরা ছাদ থেকে নেমে কারখানার একতলায় আসেন। ওই সময় আচমকাই তাঁদের উপর ম্যাজেনাইন ফ্লোর ভেঙে পড়ে। বিকট আওয়াজ পেয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়ায়। এন্টালি থানার পুলিসও ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার শুরু করে। খবর পেয়ে কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের বড় টিম পৌঁছে চাপা পড়া দুই নিরাপত্তা কর্মীকে উদ্ধারের চেষ্টা শুরু করে। প্রায় ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় দুই ভাইয়ের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসক তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছন স্থানীয় ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার সবিতারাণী দাস। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ, সোমবার ফরেন্সিক টিম ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখবে। তাদের তদন্তপ্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের ডেমোলিশন টিম জায়গা পরিষ্কারের কাজ শুরু করবে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বন্ধ কারখানার মধ্যে নিরাপত্তারক্ষী ও কেয়ারটেকার থাকলেও তা বহু বছর সংস্কার করা হয়নি। বহু জায়গায় দেওয়াল ভেঙে পড়েছিল। সেইসব জায়গা দিয়ে স্থানীয় নেশাড়ুরাও ঢুকে পড়ত। আগেও কারখানার দেওয়ালের একাংশ ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটেছিল। তারপরও কারও হুঁশ ফেরেনি। মেয়র বলেন, ‘দীর্ঘদিনের পুরনো অ্যাসিড কারখানা। বহু বছর বন্ধ হয়ে পড়েছিল। শুনেছি সম্প্রতি মালিকানা বদল হওয়ার পর সংস্কারের কাজও শুরু হয়েছিল। কী কারণে এই দুর্ঘটনা, দেখা হচ্ছে।’ -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)