পানীয় জলের ব্যবস্থা না করেই ফ্ল্যাট বিক্রি করছে প্রোমোটার, ক্ষুব্ধ মেয়র, বিল্ডিং প্ল্যানে ‘ওয়াটার রিসোর্স’ উল্লেখ করার নির্দেশ
বর্তমান | ১৮ নভেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ফ্ল্যাট বা আবাসনে পানীয় জল সরবরাহের উৎস কী? সেখানকার বাসিন্দাদের জন্য পানীয় জল সরবরাহ কোথা থেকে হবে? এবার তা উল্লেখ করতে হবে বিল্ডিং প্ল্যানেই। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে মেয়র ফিরহাদ হাকিম কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগকে এই নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ফ্ল্যাট বা আবাসনে নিকাশির কী ব্যবস্থা থাকছে, তাও উল্লেখ করতে হবে। ফলে ক্রেতারা ফ্ল্যাট কেনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই পানীয় জল ও নিকাশির মতো দু’টি অপরিহার্য পরিষেবা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারবেন। নির্মাণকারী সংস্থা বা প্রোমোটাররা তাঁদের ঠকাতে বা বিভ্রান্ত করতে পারবেন না।
পুরসভা সূত্রে খবর, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, প্রোমোটার ফ্ল্যাট বিক্রি করে দিচ্ছেন। ক্রেতা বা ফ্ল্যাটের মালিকপক্ষ পরে জানতে পারছে যে সেখানে পুরসভার পানীয় জলের সংযোগই নেই। পাম্পের সাহায্যে ভূগর্ভস্থ জল তুলে চাহিদা মেটানো হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে সেই জলের মানও এতটা খারাপ যে পানের অযোগ্য। সম্প্রতি, ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে কসবা অঞ্চল থেকে এমনই একটি অভিযোগ আসে। ভুক্তভোগী নাগরিক যেখান থেকে ফোন করেছিলেন, সেটি রাজজাঙা এলাকার রীতিমতো অভিজাত একটি আবাসন। সব্যসাচী মুখোপাধ্যায় নামে ওই অভিযোগকারী জানান, তিন বছর ধরে তিনি ওই আবাসনের বাসিন্দা। ফ্ল্যাট কেনার সময় প্রোমোটার তাঁকে জানিয়েছিল, পুরসভার জলের লাইন করে দেওয়া আছে। কিন্তু পরে দেখা যায়, আবাসন নির্মাণের সময় যে গভীর নলকূপ খুঁড়ে জলের ব্যবস্থা করা হয়েছিল, সেই জলই এখন আবাসনের ৬০টি ফ্ল্যাটে সরবরাহ করা হচ্ছে। সেই জলের মানও অত্যন্ত খারাপ। এই অবস্থায় তিনি নতুন করে পুরসভার পানীয় জল সরবরাহ বিভাগের কাছে ‘কানেকশন’-এর জন্য আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু তাও পাওয়া যাচ্ছে না। মেয়র তাঁকে জানান, ধাপায় নতুন জলপ্রকল্প তৈরি হচ্ছে। তার আগে এত বড় আবাসনের জন্য পানীয় জল সরবরাহ করা সম্ভব নয়। মেয়র তাঁকে জানান, গভীর নলকূপের জন্য পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের কাছে (সুইড) আলাদা করে অনুমতি চাওয়া যেতে পারে। তখন সব্যসাচীবাবু বলেন, ‘নতুন একটি গভীর নলকূপের জন্য আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু সেই আবেদনও ঝুলে রয়েছে।’ এরপরই মেয়র বিল্ডিং বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন, বড় আবাসন বা ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে বিল্ডিং প্ল্যানে যেন পানীয় জল এবং গোটা আবাসনের নিকাশি ব্যবস্থা কী রয়েছে, তার উল্লেখ থাকে। পুরকর্তারা জানাচ্ছেন, বর্তমানে বিল্ডিং প্ল্যানে এমন কিছু লেখা থাকে না বলেই তার সুযোগ নিচ্ছে কিছু অসাধু প্রোমোটার।