কী হয়েছিল? জানা গিয়েছে, গতকাল, রবিবার রাত দেড়টা নাগাদ হঠাৎই আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন প্রকাশ। নার্সদের টেবিল থেকে একটি কাঁচি নিয়ে অন্য রোগী ও নার্সদের আক্রমণ করতে উদ্যত হন তিনি। ফিমেল মেডিসিন ওয়ার্ডেও ঢুকে পড়েন। তারপর নার্সিং স্টাফদের ঘরের ভিতর দিয়ে গিয়ে সিঁড়ি বেয়ে ছাদে উঠে যান। তারপর সেখান থেকে নীচে ঝাঁপ দেন। তাঁকে উদ্ধার করে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা শুরু করা হয়। অপারেশনের প্রয়োজন পড়ে। অপারেশন থিয়েটারে নিয়েও যাওয়া হয়। তবে সেখানে ঢোকানোর পরে রাত তিনটে নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর।
গতরাতেই, রবিবারই ঘটনার খবর দেওয়া রোগীর পরিবারকে। আজ, সোমবার সকালে মৃতদের পরিবার হাসপাতালে আসেন। তাঁদের প্রশ্ন, কী করে এই ঘটনা ঘটল, হাসপাতালে কেন কোনো নিরাপত্তা নেই? মৃতের স্ত্রী মিঠু বাইন বলেন, হাসপাতাল থেকে তাঁদের ফোন করা হয় তাড়াতাড়ি আসার জন্য বলা হয়। ওঁরা জানান, উনি ছুরি-কাঁচি নিয়ে সকলকে ভয় দেখাচ্ছেন। শুনে আমরা অবাক! কেননা, আগে কখনও এরকম ঘটেনি। উনি এই প্রথম এমন করছেন। এদিকে আমি আয়া রাখিনি। বাড়িতে আর কোনও পুরুষও নেই। যিনি চলে গিয়েছেন তাঁকে আর ফিরে পাব না।
খবর পেয়ে সকালেই হাসপাতালে চলে আসেন হুগলি জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মৃগাঙ্ক মৌলি কর। সুপারকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন তিনি। হাসপাতালের সুপার সন্তু ঘোষ বলেন, তিনদিন আগে ভর্তি হয়েছিলেন প্রকাশবাবু। চিকিৎসা চলছিল তাঁর। ক্রনিক অ্যালকহলিক রোগী ছিলেন। এঁরা মদ না পেলে এরকম আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন। ওঁরও তাই ঘটেছিল। উনি হাতে কাঁচি নিয়ে রোগীদের ভয় দেখিয়ে ছাদে উঠে যান। তারপর হাসপাতালের পিছন দিকে লাফ দেন। উদ্ধার করার পরেও বেঁচে ছিলেন।
মৃত কি মদ খেতেন? তাঁর পরিবারের লোক কী বলছেন? মৃতের শ্যালক কবীর চৌধুরী বলেন, হ্যাঁ, জামাইবাবু মদ খেতেন। একটু বেশি পরিমাণেই খেতেন। প্রশ্ন উঠছে, হাসপাতালে কি নিরাপত্তারক্ষী নেই? সুপার সন্তু ঘোষ জানান, হ্যাঁ, নিরাপত্তারক্ষী আছে। তিনি নীচে থাকেন।