লোকসভা নির্বাচন মিটে গিয়েছে কয়েক মাস হল। বিপুল ভোটের ব্যবধানে শতাব্দী বীরভূম কেন্দ্র থেকে জয়ী হন। জয়ের পর শতাব্দী বলেছিলেন, ‘‘কেষ্টদার সঙ্গে দেখা করতে আসব।’’ কিন্তু গত সেপ্টেম্বরে কেষ্ট তিহাড় থেকে বীরভূমে ফেরার পরে যখন দলে দলে নেতা এবং কর্মীরা তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন এবং কথা বলেছেন, সেই তালিকায় ‘উল্লেখযোগ্য অনুপস্থিতি’ ছিল দু’জনের। প্রথম জন কাজল। দ্বিতীয় জন শতাব্দী। বস্তুত, কেষ্টর জামিনে মুক্তি প্রসঙ্গে শতাব্দীর সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া ছিল, ‘‘ভাল, খুব ভাল। যে কর্মীদের সঙ্গে ওঁর সম্পর্ক ভাল, তাঁরা খুশি।’’
আসলে শতাব্দী এবং কাজল, দু’জনের সঙ্গেই কেষ্টর সম্পর্ক ‘মধুর’। কেষ্ট জেলায় ফেরার পর তৃণমূলের তরফ থেকে বীরভূমে অনুষ্ঠিত হওয়া প্রায় সব বিজয়া সম্মিলনীতে উপস্থিত হয়েছেন। সেখানেও অনুপস্থিত ছিলেন শতাব্দী এবং কাজল। সোমবার সিউড়িতে অম্রুত-২ প্রকল্পের উদ্বোধনে এসে কেষ্ট প্রসঙ্গে শতাব্দী বলেন, ‘‘এখনও কোনও ডেট (তারিখ) ঠিক করিনি বা দেখা করার বিষয় নেই। দেখা হলে হবে।’’
গত শনিবার বীরভূম জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠক ছিল। কেষ্ট গ্রেফতার হওয়ার পর ওই কমিটি গড়ে দিয়েছিলেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কমিটির বৈঠকে প্রথম বার যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি কেষ্ট। ছিলেন কোর কমিটির সদস্য কাজলও, যাঁর সঙ্গে এর আগে দলীয় কার্যালয়ে এক বারই বৈঠক হয়েছে অনুব্রতের। কিন্তু অনুব্রত এই কোর কমিটির সপ্তম সদস্য হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হলেন, না কি তিনিই কোর কমিটির চেয়ারপার্সন, তা নিয়ে জল্পনা অব্যাহত। কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায় চৌধুরী বলেন, ‘‘অনুব্রত মণ্ডলের সিদ্ধান্তকে কি আমরা ‘ইগনোর’ করব?’’ অন্য দিকে, বৈঠক থেকে বেরিয়ে জেলা সভাধিপতি কাজল বলেন, ‘‘উনি (কেষ্ট) কোর কমিটির সদস্যের পদে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।’’ কাজলের মতো একই কথা বলেছেন শতাব্দীও। রবিবারই বীরভূমের সাংসদ বলেছেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্তের উপরে দল চলে। তাঁদের সিদ্ধান্ত, প্রত্যেককে নিয়ে কাজ করার। সুতরাং, অনুব্রত মণ্ডল কোর কমিটিতে এসেছেন, সেটা ভালই হয়েছে।’’