নিজস্ব প্রতিনিধি কলকাতা ও শিলিগুড়ি: জেলা জুড়ে ট্যাব কেলেঙ্কারির মাথা খুঁজতে ধৃতদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের লেনদেনই ভরসা রাজ্য পুলিসের যৌথ তদন্তকারী দলের। তার সূত্র ধরেই কয়েকজনকে চিহ্নিত করা গেলেও, তাদের এখনও নাগাল পাননি তদন্তকারীরা। বেশ কয়েকজন ইতিমধ্যেই অন্য রাজ্যে গা ঢাকা দিয়েছেন বলে খবর। একইসঙ্গে স্কুলের শিক্ষকদের কোনও চক্র এই কাজ করেছে কি না, সেটাও দেখা হচ্ছে। ট্যাব কেলেঙ্কারিতে জড়িত সন্দেহে রবিবার রাতে শিলিগুড়ির ভক্তিনগর থেকে হাইস্কুলের শিক্ষক দিবাকর দাসসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে কলকাতা পুলিস। এরমধ্যে দিবাকর অন্যতম মাস্টার মাইন্ড বলে দাবি করেছেন গোয়েন্দারা। তিনি বিভিন্ন স্কুলের মেল আইডি ও পাসওয়ার্ড অন্যদের সরবরাহ করতেন বলে জানা যাচ্ছে। এদিকে বিধাননগর কমিশনারেটও একজনকে ধরেছে।
ট্যাবকাণ্ডে রাজ্য পুলিসে এখনও পর্যন্ত ১৩৫টি এফআইআর হয়েছে। ধরা পড়েছে ১৯ জন। .ধৃতদের জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পারছেন, তাদের নথি ব্যবহার করে অ্যাকাউন্ট খুলেছিল চক্রের মাথারা। টাকা জমা পড়ার পর তা অন্য অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করেছে। এর বিনিময়ে তারা অল্প কিছু কমিশন পেয়েছে। সকলেই পুলিসকে জানিয়েছে, তাদের গ্রামের পরিচিত এক ব্যক্তি এসে এভাবে টাকা রোজগারের কথা বলেছিল। অর্থের লোভেই তারা নথি দেয়। এরপর পরিচিত ব্যক্তির কথামতো টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেয় জমা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে। এখান থেকেই তদন্তকারীরা বুঝতে পারছেন, এগুলি সবই বেনিফিশিয়ারিদের অ্যাকাউন্ট। তাদের সঙ্গে চক্রের মুল পাণ্ডাদের যোগ নেই। চক্রের কয়েকজনকে তারা চিনত। যাদের নাম ধৃতরা জানিয়েছে, তাদের খোঁজে মালদহ. চোপড়া সহ বিভিন্ন গ্রামে গেলেও পাওয়া যায়নি। মোবাইলও বন্ধ। এই অবস্থায় তাদের একমাত্র ভরসা, যে অ্যাকাউন্টে পড়ুয়াদের টাকা স্থানান্তর হয়েছে, সেগুলি। তার সূত্র ধরে জানার চেষ্টা চলছে, এই অ্যাকাউন্টগুলি কে বা কারা ব্যবহার করছিল। সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টগুলিতে যে মোবাইল নম্বর দেওয়া রয়েছে, তার সূত্র ধরে তদন্তকারীরা জানার চেষ্টা করছেন, সেগুলি কাদের নামে নেওয়া। পাশাপাশি অ্যাকাউন্টগুলি খোলার পর এটিএম কার্ড নেওয়া হয়। সেই কার্ড নম্বরের ভিত্তিতে তদন্তকারীরা জানার চেষ্টা করছেন, এই কার্ড ব্যবহার করে কোন কোন এটিএম থেকে টাকা তোলা হয়েছে। এমনকী এটিএমে থাকা সিসি ক্যামেরার সূত্র ধরে বাকি অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।