• শাসনে যুবকের রহস্যমৃত্যু, গ্রেপ্তার লিভ-ইন পার্টনার
    বর্তমান | ১৯ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: রবিবার রাতে শাসনের খড়িবাড়িতে যুবকের রহস্যমৃত্যু ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অবরোধ ও বিক্ষোভে তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। পুলিসের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বাঁধে স্থানীয়দের। পুলিসকে লক্ষ্য করে বোমাবাজি করা হয় বলেও অভিযোগ। পাল্টা লাঠিচার্জ ও কাঁদানো গ্যাসের সেল ফাটায় পুলিস। বাহিনীর উপর হামলার ঘটনায় ন’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাশাপাশি মৃত আলামিন সাহাজির (২৩) লিভ-ইন পার্টনার সোমা মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। সোমবার সকালেও থমথমে ছিল এলাকা।


    স্থানীয়দের দাবি, শাসনের আলামিন সাহাজির সঙ্গে সোমা মণ্ডল নামে এক যুবতীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মহিষগদি এলাকায় ভাড়াবাড়িতে সোমার সঙ্গে লিভ-ইনে থাকতেন তিনি। আলামিন খড়িবাড়ি মাছবাজারে কাজ করতেন। লিভ-ইনে থাকাকালীন সোমার সঙ্গে অশান্তি হতো। রবিবার আলামিন কাজে না যাওয়ায় সহকর্মীরা গিয়ে বাড়িতে তাঁর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। ছিল না সোমা। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে শাসন থানার পুলিস এসে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। কিন্তু দেহ নিয়ে যাওয়ার সময় সোমা শাসন থানাতে যায়। এরপর থেকেই তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। সোমাকে নিয়ে সন্দেহ হয় পরিবারের লোকদের। এদিকে, পরিবারের লোকজন খুনের অভিযোগ জানাতে শাসন থানায় গেলেও পুলিস তাঁদের ঘুরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। মৃতের পরিবার ও স্থানীয়দের ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল পুলিসের উপর। রবিবার রাতে ময়নাতদন্তের পর দেহ বাড়িতে আনা হয়। মাটি দেওয়ার আগে পরিবার ও প্রতিবেশীরা জানতে পারে, মৃতদেহে একাধিক ক্ষত রয়েছে। তাঁদের অনুমান, আলামিনকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।  


    পার্টনার সোমাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে ক্ষোভ বাড়তে থাকে। রবিবার রাত সাড়ে আটটার সময় মৃতদেহ নিয়ে শাসনের খড়িবাড়ি-রাজারহাট রোডে খড়িবাড়ি চৌমাথায় দেহ রাস্তায় রেখে আগুন জ্বালিয়ে চলে অবরোধ। ঘণ্টা দুয়েক বিক্ষোভের পর সেখানে আসে শাসন থানার পুলিস। বিক্ষোভকারীদের একাংশের সঙ্গে পুলিসের বচসা বাধে। ধস্তাধস্তিও হয়। ক্ষিপ্ত জনতা পুলিসের উপর হামলা চলায় বলেও অভিযোগ। মারধরের ফলে শাসন থানার আইসি সহ কয়েকজন পুলিসকর্মী আহত হন। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝেই বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিস লাঠিচার্জ করে ও ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের সেলও। ক্ষিপ্ত জনতা খড়িবাড়ি পুলিস ক্যাম্পেও ভাঙচুর চালিয়েছে বলে অভিযোগ। শেষে অবশ্য মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে সোমার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগে দায়ের হলে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। বারাসত পুলিস জেলার পুলিস সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খড়িয়া বলেন, ‘খুনের অভিযোগের ভিত্তিতে মৃতের লিভ-ইন পার্টনার সোমা মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মারধর ও হামলার ঘটনায় ন’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
  • Link to this news (বর্তমান)