• হাসপাতালের ছাদ থেকেই মরণঝাঁপ রোগীর, উঠল গাফিলতির অভিযোগ
    বর্তমান | ১৯ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: হাসপাতালের ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হলেন এক রোগী। রবিবার রাতে হুগলির চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে এই ঘটনার জেরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মৃতের পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওই রোগী হাসপাতালে তাণ্ডব শুরু করেছিলেন। অপারেশনের সময় যে ধরনের ছুরি ব্যবহার করা হয়, তা হাতে নিয়ে তিনি কর্মীদের ভয় দেখান। যাতে কেউ সামনে না আসে। এরপর এক ছুটে ছাদে চলে গিয়ে ঝাঁপ দেন। পুলিস জানিয়েছে, মৃতের নাম প্রকাশচন্দ্র বাইন (৪৩)। আদতে তাঁর বাড়ি মুর্শিদাবাদে হলেও পেশাগত কারণে চন্দননগরের মহাডাঙা কলোনিতে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। গত সাত বছর ধরে এই শহরেই তিনি গাড়ি চালাতেন।


    রবিবার রাতের ওই ঘটনার পর সোমবার সকালেই এই মহকুমা হাসপাতাল পরিদর্শনে আসেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ মৃগাঙ্কমৌলি কর। তিনি হাসপাতালের সুপারকে নিয়ে গোটা হাসপাতাল ঘুরে দেখেন। ডাঃ কর অবশ্য গাফিলতির অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি বলেন, খুবই দুভার্গ্যজনক ঘটনা। মৃতের পরিবার এখনও পর্যন্ত নির্দিষ্টভাবে কোনও অভিযোগ করেনি। যদি তাঁরা অভিযোগ করেন, তবে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।


    স্বামীর মৃত্যুর খবর পেয়ে এদিন সকালে চন্দননগর হাসপাতালে আসেন মৃতের স্ত্রী মিঠু বাইন ও শ্যালক কবীর চৌধুরী। মিঠু বলেন, আমরা গরিব মানুষ। তাই আয়া রাখতে পারিনি। কর্তৃপক্ষ বলছে, তিনি নাকি হাসপাতালের কর্মীদের ছুরি দিয়ে ভয় দেখিয়ে ছাদে উঠে গিয়েছিলেন। অতীতে কখনওই এমন আচরণ আমার স্বামী করেননি। হাসপাতালে রোগীর প্রকৃত যত্ন করা হলে আমি স্বামীহারা হতাম না। হাসপাতালের ডাঃ সুপার সন্তু ঘোষ বলেন, ওই ব্যক্তি মাদকাসক্ত। নিয়মিত মদ্যপান করতেন। দিনকয়েক হাসপাতালে থাকার কারণে মদ না পাওয়ায় ওই রাতে হঠাৎই হিংস্র হয়ে ওঠেন। তখন রাত ৩টে হবে। হাসপাতালের নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁকে বুঝিয়ে আটকানোর চেষ্টা করলেও কাউকে পাত্তা দেননি তিনি। উল্টে টেবিল থেকে একটি ছুরি হাতে নিয়ে মারমুখী হয়ে ওঠেন। স্বভাবতই ভয় পেয়ে কেউ সামনে যেতে পারেননি। এরপরই ওই রোগী এক ছুটে ছাদে উঠে যান এবং ঝাঁপ দেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালের কর্মী ও ডাক্তাররা জরুরি অপারেশন করেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে তাঁকে বাঁচানো যায়নি। এরপরেও কেন গাফিলতির অভিযোগ উঠছে, জানি না।


    প্রকাশচন্দ্র বাইনকে শুক্রবার তাঁর পরিবার হাসপাতালে ভর্তি করেছিল। মূলত, পেটে ব্যথা ও রক্তবমির উপসর্গ ছিল। রবিবার সকালে তিনি কিছুটা সুস্থও হয়ে উঠেছিলেন। এরপর রাতে আচমকা হিংস্র হয়ে ওঠেন তিনি। তারপর ছাদ থেকে ঝাঁপ দেন।
  • Link to this news (বর্তমান)