• বাথরুমে যাওয়ার নাম করে মেডিক্যাল থেকে চম্পট জেলবন্দি, রাতেই গ্রেপ্তার
    বর্তমান | ২০ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: বাথরুমে যাওয়ার নাম করে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল থেকে পালায় চিকিৎসাধীন এক জেলবন্দি আসামি। যদিও শেষরক্ষা হল না। রাতে ধরা পড়ে গেল শিলিগুড়িতে। অলয় বিশ্বাস নামে ওই জেলবন্দির বাড়ি জলপাইগুড়ি জেলা লাগোয়া শিলিগুড়ি পুরসভার ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে। পকসো আইনে মামলা চলছে তার বিরুদ্ধে। মাস ছ’য়েক ধরে জলপাইগুড়ি জেলে রয়েছে সে। হার্নিয়া অপারেশনের জন্য ১১ নভেম্বর তাকে জলপাইগুড়ি মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়। ১২ তারিখ অপারেশন হয়। তারপর মেডিক্যালের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সার্জিক্যাল ওয়ার্ডেই ছিল সে। তার পাহারায় পালা করে ডিউটি করছিলেন দু’জন জেলরক্ষী। 


    মঙ্গলবার ভোর ৪টে নাগাদ বাথরুমে যাওয়ার নাম করে হাসপাতাল থেকে পালায় ওই বন্দি। এ ঘটনায় ব্যাপক আলোড়ন ছড়ায় জলপাইগুড়ি শহরে। ঘটনায় কর্তব্যরত জেলরক্ষীদের বিরুদ্ধে যেমন গাফিলতির অভিযোগ উঠছে, তেমনই মেডিক্যালের নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষী থাকা সত্ত্বেও কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও। হাসপাতাল থেকে বন্দি পালানোর ঘটনায় জেল কর্তৃপক্ষের তরফে কোতোয়ালি থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়। তারই প্রেক্ষিতে পলাতক ওই জেলবন্দির খোঁজে তল্লাশি শুরু করে পুলিস। রাতে সে গ্রেপ্তার হওয়ায় স্বস্তি ফেরে পুলিস ও জেল কর্তৃপক্ষের।


    জেলার পুলিস সুপার খণ্ডবাহালে উমেশ গণপত বলেন, জলপাইগুড়ি মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন অলয় বিশ্বাস নামে এক জেলবন্দি মঙ্গলবার ভোরে পালায়। পুলিস ওই পলাতক জেলবন্দির খোঁজে তল্লাশিতে নামে। রাতে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিসের হাতে শিলিগুড়িতে গ্রেপ্তার হয় সে। বুধবার নতুন মামলায় তাকে আদালতে তোলা হবে।


    এদিকে, ঘটনার খবর পেয়েই এদিন জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে আসেন জেলের ভারপ্রাপ্ত ডিআইজি দর্জি ভুটিয়া। জেল সুপারের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে জানান, কীভাবে ওই জেলবন্দি আসামি মেডিক্যাল থেকে পালাল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কর্তব্যরত জেলরক্ষীর বিরুদ্ধেও বিভাগীয় তদন্ত হবে। 


    বছর পঁয়ত্রিশের ওই আসামি পালানোর সময় জেলের রক্ষীরা কোথায় ছিলেন, কীভাবে ওই কয়েদি পালাল, তা জানতে খতিয়ে দেখা হচ্ছে মেডিক্যালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ। তবে তার পালানোর ঘটনায় দায় নিতে নারাজ মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ। মেডিক্যালের সুপার ডাঃ কল্যাণ খাঁ বলেন, সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিল ওই আসামি। তার পাহারায় জেলরক্ষী ছিলেন। ফলে ওই আসামি কীভাবে পালাল, তা কর্তব্যরত জেলরক্ষীই বলতে পারবেন। পুলিস ও জেল কর্তৃপক্ষ ঘটনার তদন্ত করছে। এর সঙ্গে হাসপাতালের কোনও বিষয় নেই। এদিকে, বন্দি পালানোর পর জেল কর্তৃপক্ষের তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে, জলপাইগুড়ি মেডিক্যালে প্রিজনার্স সেল না থাকায় ওয়ার্ডে সাধারণ রোগীদের সঙ্গে কয়েদিদের রেখে চিকিৎসা করাতে হয়। ফলে ওয়ার্ডে অনেক রোগী থাকায় কর্তব্যরত রক্ষীদের পক্ষে অনেকসময় ঠিকমতো নজরদারি চালানো সম্ভব হয় না। ভারপ্রাপ্ত ডিআইজি বলেন, মেডিক্যালে যাতে দ্রুত প্রিজনার্স সেল তৈরি হয়, সে ব্যাপারে আবারও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলা হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)