• সুশান্ত কাণ্ডে মিলল বেউর জেল-ফেরত মিডলম্যানের যোগ, হন্যে হয়ে খুঁজছেন তদন্তকারীরা
    বর্তমান | ২০ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: শাসক দলের কাউন্সিলার সুশান্ত ঘোষকে নিকেষ করার চক্রান্তে যুক্ত বিহারের কুখ্যাত গ্যাংস্টার পাপ্পু চৌধুরির এক শাগরেদ এখন লালবাজারের নজরে। খুনের অভিযোগে সদ্য বেউর জেল থেকে জামিনে মুক্ত হওয়া ওই শাগরেদ পাপ্পু গ্যাং এবং আফরোজ ওরফে গুলজার ওরফে ইকবালের মধ্যে যোগসূত্র বা মিডলম্যান হিসেবে কাজ করেছিল। সুশান্তকে খুনের চেষ্টার চক্রান্তে অভিযুক্ত আফরোজকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই তথ্য হাতে এসেছে বলে দাবি করেছে লালবাজার। সুশান্ত কাণ্ডে অংশ নেওয়ার আগে ওই মিডলম্যান গত অক্টোবরে কসবায় এসে রেইকি করে গিয়েছিল বলেও পুলিস জেনেছে। এই পর্বেই কসবার রাজডাঙা চক্রবর্তী পাড়ায় গত শুক্রবারের (১৫ নভেম্বর) অপারেশনে ব্যবহৃত স্কুটিটি 


    মঙ্গলবার দুপুরে বন্ডেল গেটের কাছ থেকে উদ্ধার করেছে পুলিস। বিহারের বৈশালীর শ্যুটার যুবরাজ সিংকে চাপিয়ে সুশান্ত নিকেষ অভিযানে এসেছিল স্থানীয় দুষ্কৃতী ছোটকা ওরফে ছোটু। পুলিস জানিয়েছে, বন্ডেল গেটের কাছে স্কুটিটি ফেলে রেখে বালিগঞ্জ স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠে ছোটু গা-ঢাকা দিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।


    সুশান্ত ঘোষকে খুনের সুপারি নেওয়া অভিযুক্তদের খোঁজে ইতিমধ্যেই বিহারে রওনা দিয়েছে গোয়েন্দাদের দল।  সেখানে পৌঁছে তাঁরা পুলিসের সঙ্গে কথা বলেছেন। গোটা ঘটনায় বেউর জেল ফেরত ওই মিডলম্যানের কাজ করা ব্যক্তির সম্পর্কে তথ্য চান গোয়েন্দারা। জানা যাচ্ছে, বিহারের কুখ্যাত সুপারি কিলার গ্যাংয়ের মাথা পাপ্পু চৌধুরি এই মিডলম্যানের মাধ্যমেই সকলের সঙ্গে ’ব্যবসার’ কথা বলত। জানা যাচ্ছে, বিহার থেকে আসা আগ্নেয়াস্ত্র ওই মিডলম্যান পাঠিয়েছিল। এদিকে ঘটনায় জড়িত তিন অভিযুক্তের মোবাইল বন্ধ। বিহারে তাদের বাড়ি ও ডেরায় তল্লাশি চালিয়েও পাওয়া যায়নি।


    এদিকে তদন্তে উঠে আসছে আরও এক গ্যাংস্টারের নাম। সুশান্ত কাণ্ডে ধৃত শুট্যার যুবরাজ সিংয়ের গ্রামের বাসিন্দা ওই ‘ডন’ বিহার পুলিসের খাতায় মোস্ট ওয়ান্টেড।  সুপারি দিয়ে কাউকে খতম করতে চাইলে ভিন রাজ্যের অনেকেই তার সঙ্গে যোগাযোগ করত। পাপ্পুর মতোই তারও নিজস্ব একটি গ্যাং রয়েছে। সূত্রের খবর, কলকাতা ও রাজ্য পুলিস এলাকায় সে একাধিক ব্যক্তিকে সুপারি নিয়ে নিকেষও করেছে। তার বিরুদ্ধে গোটা আটেক মামলা রয়েছে এই রাজ্যে। ওই গ্যাংস্টার দেশ ছেড়ে এখন দুবাইতে আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে বসে গোটা গ্যাংকে নিয়ন্ত্রণ করছে। পাশাপাশি সুপারি নিচ্ছে ভিনরাজ্য থেকেও। পাপ্পু গ্যাংয়ের পাশাপাশি সুশান্ত কাণ্ডে তারও কোনও ভূমিকা রয়েছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। অভিযুক্ত আফরোজ ওরফে ইকবাল জেরায় বিভিন্ন গ্যাংস্টারদের কথা তুলে ধরে 


    বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে তদন্তকারীদের। এমনকী সে দাবি করেছে, বিহারের যে ইকবালের কথা সে প্রথমে বলেছিল, ওই নামে আসলে কেউ নেই। বিহারের অপরাধের দুনিয়ায় বেতাজ বাদশা বলে পরিচিত কার কার  সঙ্গে আফরোজের যোগাযোগ ছিল, সেটা তার মোবাইলের কল ডিটেইলস ঘেঁটে জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। একইসঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র কেনাবেচায় গুলজারের ভূমিকা খতিয়ে দেখেছেন গোয়েন্দারা। পাশাপাশি এও জানা গিয়েছে, সে কিছুদিন দুবাইতে কাজ করেছে। তার আত্মীয়রা সেখানে রয়েছে। দুবাই থেকে রোজগার করা মোটা টাকা সে বিনিয়োগ করেছিল গুলশন কলোনি এলাকায় গোডাউন ও অবৈধ জমি কেনায়। যে গোডাউন দিয়ে গোলমাল, সেটি জমি দখল করে তৈরি করা বলে জেনেছে পুলিস। যার একাংশ ছিল কৃষি জমি বাকিটা খাস। জমির চরিত্র জানতে ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরের  সঙ্গে যোগাযোগ করেছে পুলিস।
  • Link to this news (বর্তমান)