• কার্তিক পুজোর শোভাযাত্রায় জনস্রোত, উৎসব মরশুমের শেষ রাতে বিস্ময়নগরী বাঁশবেড়িয়া
    বর্তমান | ২০ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: কার্তিক পুজোর শোভাযাত্রা ঘিরে মঙ্গলবার রাতে রঙিন হয়ে উঠেছিল বাঁশবেড়িয়া। একদিকে থইথই ভিড় অন্যদিকে শোভাযাত্রার বর্ণময় আয়োজন নজর কেড়ে নিয়েছে। রাতের অন্ধকার চিরে কখনও হাজির হয়েছে ডলফিন থেকে ডুবুরি, কখনও আচমকা আলোকমালায় সেজে ভেসে উঠেছে গণপতির মূর্তি। সারিবদ্ধভাবে দর্শকদের দেখা দিয়েছেন বিশালাকৃতি কার্তিক থেকে শিবঠাকুর, গোরুড় থেকে ভারত মাতা। ৪৩টি পুজো উদ্যোক্তাদের দীর্ঘ শোভাযাত্রা দেখতে গভীর রাত পর্যন্ত জেগেছে বাঁশবেড়িয়া, চুঁচুড়া। জল ও ট্রেন পথেও প্রচুর মানুষ এদিন জেলার বিভিন্ন প্রান্ত ও ভিনজেলা থেকে বাঁশবেড়িয়া, সাহাগঞ্জে এসে জমায়েত করেছিলেন।

    শোভাযাত্রাকে ঘিরে ছিল পুলিসি নিরাপত্তা। উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক তপন দাশগুপ্ত, অসিত মজুমদার, মহকুমা শাসক স্মিতা সান্যাল শুক্লা। বাঁশবেড়িয়া কেন্দ্রীয় কার্তিক পুজো কমিটির কর্তা তথা বাঁশবেড়িয়ার পুরপ্রধান আদিত্য নিয়োগী বলেন, শোভাযাত্রা সামান্য দেরিতে শুরু হয়েছে। কিন্তু রাত পর্যন্ত সমস্ত অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে হয়েছে। প্রচুর মানুষ ভিড় করেছিলেন। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও দর্শকদের সুবিধার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। দুপুরের মধ্যে ভাসানপর্বও সুষ্ঠুভাবে মিটে গিয়েছে। সপ্তগ্রামের বিধায়ক তপন দাশগুপ্ত চুঁচুড়ার ত্রিকোণ পার্কে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, বহু বছর ধরে বিখ্যাত শোভাযাত্রা দেখছি। কিন্তু প্রতিবছরই চমক লাগে। এবারও নজরকাড়া শোভাযাত্রা হয়েছে। নৈহাটি থেকে দুপুরেই সপরিবারে চলে এসেছিলেন সনাতন বসাক। তিনি বলেন, যেমন আলোর খেলা দেখেছি তেমনই বর্ণময় ও সুশৃঙ্খল শোভাযাত্রা হয়েছে। খুব আনন্দ পেয়েছি। 

    হুগলির পুজো মরশুম কালীপুজোর সঙ্গে শেষ হয়ে যায় না। কারণ, জেলায় থাকে চন্দননগর ও রিষড়ার জগদ্ধাত্রী পুজো এবং বাঁশবেড়িয়ার বিখ্যাত কার্তিক পুজো। কার্তিক পুজোর শোভাযাত্রার সঙ্গে যেমন কার্তিক বিসর্জন হয় তেমনই শেষ হয় গঙ্গাপাড়ের উৎসব মরশুম। সেই নিরিখে পুজো মরশুমের শেষ উৎসবের স্বাদটুকু চেটেপুটে নেওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা থাকে হুগলির বাসিন্দা মহলে। মঙ্গলবার দুপুর থেকেই সেই আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন দেখা গিয়েছে বাঁশবেড়িয়া, সাহাগঞ্জে। দুপুর গড়ানোর আগেই রাস্তার দু’ধারে কাতারে কাতারে মানুষ ভিড় জমিয়েছেন। রাস্তার পাশে থাকা বাড়ির ঝুলবারান্দা, ছাদ থেকেও উঁকিঝুঁকি দিতে শুরু করেছিল ভিড়। সোমবার রাত থেকেই শোভাযাত্রার রাস্তার দু’পাশে জায়গা ধরে রাখার তৎপরতা শুরু হয়েছিল। মঙ্গলবার দুপুরেও তা দেখা গিয়েছে। আর বাঁশবেড়িয়া, ত্রিবেণী স্টেশন এবং ডানলপ ফেরিঘাট দিয়ে দলে দলে মানুষকে শহরে ঢুকতে দেখা গিয়েছে। সন্ধে গড়াতেই চারদিক আলোকমালায় সেজে ওঠে। তারপর একের পর এক সুসজ্জিত লরি এসেছে আর উৎসাহে ফেটে পড়েছে ভিড়। চমকদার আলোর খেলা দেখে বিস্ময়ে বাক্যহারা হয়েছেন আবালবৃদ্ধবণিতা। ভিড়ে ঠাসা রাস্তা ধরে গভীর রাত পর্যন্ত চলেছে শোভাযাত্রার সফর। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)