পরিচারিকার ছদ্মবেশে মাদকের বিশাল কারবার, গ্রেপ্তার কোটিপতি করিনা
বর্তমান | ২০ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, বজবজ: মহেশতলার ষোলবিঘা বস্তিতে টিনের চাল আর বেড়ার ঘরে থাকে করিনা বিবি। বাড়ি বাড়ি পরিচারিকার কাজ করে কোনওভাবে সংসার চলে তাঁর। চালচলনে বাহুল্য নেই। সব সময়েই রংচটা পোশাকে দেখা যায় তাঁকে। এভাবেই তাঁকে এতকাল দেখে এসেছে যোলবিঘার পড়শিরা। কিন্তু সেই করিনা বিবি যে কয়েক কোটি টাকার মালিক, তা কোনওদিন টের পাননি প্রতিবেশীরা। কথাটা মহেশতলা থানার অফিসার তাপস সিনহার কানে যায়। প্রথমে তিনি আমল না দিলেও একটি ঘটনায় সন্দেহের উদ্রেক হয়। শেষে করিনার কোটিপতি হওয়ার রহস্য খুঁজতে দক্ষ মহিলা পুলিস কর্মীদের নিয়ে একটি টিম তৈরি করেন ওই অফিসার। গত পাঁচ মাস ধরে সেই টিম নানা ছদ্মবেশে করিনা বিবির পিছনে লেগে থাকে। অবশেষে দু’দিন আগে করিনাকে মোটা টাকার মাদক সহ হাতেনাতে ধরে ফেলে।
প্রাথমিক জেরায় পুলিস জানতে পেরেছে, করিমা একজন পুরদস্তুর পেশাদার ডিলার। দশ বছর ধরে এই কারবারে থাকার সুবাদে রাজ্যে মাদকের বিগ ডিলারদের সঙ্গে করিমা একটি বৃত্ত তৈরি করে ফেলেছেন। তাঁর অধীনে সাত থেকে আটজন ডিলার আছে। এই কারবারে দিনে তাঁর রোজগার ২২ থেকে ২৪ লক্ষ টাকা। কিন্তু এত রোজগার করলেও সেই টাকা কোথায় রয়েছে? তার উত্তর দেননি করিনা বিবি। এজন্য পুলিস হেফাজতে নিয়ে এই নেটওয়ার্কের বাকিদের খোঁজ করা হবে। পাশাপাশি তাঁর রোজগারের কোটি কোটি টাকা কোথায়, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিস। কোনও জঙ্গি সংগঠনের মাধ্যমে ওই টাকা ঘুরপথে খাটছে কি না, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিস। পুলিস অফিসার তাপস সিনহা বলেন, করিনা মহিলা বলে তাঁকে কেউ সন্দেহ করেনি। তাছাড়া খুব লো-প্রোফাইলে থাকতেন। শেষে নানা জায়গা থেকে খবর পেয়ে তাঁর পিছনে একটি টিম লাগাই। তাতেই জানা যায়, এই ব্যবসার মূল চক্রীরা রয়েছে মুর্শিদাবাদে। সেখান থেকে করিনা ও তার এক বোন ট্রেনে করে ওই মাদক নিয়ে আসত। করিনাকে গ্রেপ্তারের পর আপাতত আকড়া ও সন্তোষপুরে উৎপাত কিছুটা কমেছে।