অয়ন ঘোষাল ও বাসুদেব চট্টোপাধ্যায়: দূষণের চাদরে ঢাকা পড়েছে দিল্লি। রাজধানীতে দূষণের মাত্রা ৫০০ ছুঁইছুঁই। দূষণ-দৌড়ে পিছিয়ে নেই কলকাতাও। শহরের একাধিক জায়গায় দূষণের মাত্রা ২০০ ছাড়িয়েছে। তুলনামূলকভাবে যেখানে সবুজ বেশি, সেই ফোর্ট উইলিয়ামে দূষণের মাত্রা ২২৭, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল চত্বরে দূষণের পরিমাণ ১৮৬। শহরের ফুসফুস রবীন্দ্র সরোবর এলাকাতেও দূষণ-মাত্রা ১৩৯। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তথ্য বলছে, আজ সকাল ১১টায় দূষণের মাত্রা বালিগঞ্জে ২০৩, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ১৯৬, যাদবপুর ১৮৫, বিধাননগর ১৪১।
সুভাষ সরোবরে সকালে শ্বাসবাহিত ধূলিকণা ১৮২ মাইক্রো গ্রাম প্রতি ঘন মিটার। সূক্ষ্ম ধূলিকণা ২১৫ মাইক্রো গ্রাম প্রতি ঘন মিটার। অর্থাৎ স্বাভাবিকের থেকে সূক্ষ্ম ধূলিকণা ৩ গুণ বেশি। এবং ভাসমান ধূলিকণা দ্বিগুণের বেশি। যারা মুক্ত প্রাণ বায়ু নেওয়ার আশায় মর্নিং ওয়াক করছেন তারা আদতে তার সুফল পাচ্ছেন না। সকাল গড়িয়াহাট বাজারে বাতাসে ভাসমান ধূলিকণা ১৮৯। শ্বাসবাহিত ধূলিকণা ১৫৪। যা সহন মাত্রার থেকে প্রায় ৩ গুণ বেশি। দৈনিক ৬ টি প্যাসিভ স্মোকিং এর অনুরূপ বিষ বাষ্প।
এদিকে, দূষণে জেরবার হয়ে রয়েছে গোটা আসানসোল কয়লা অঞ্চল ও শিল্পাঞ্চল। আর তারই মধ্যেই এই খনি অঞ্চল লাগোয়া অংশেই অবস্থিত মঙ্গলপুর,ইকরা শিল্প তালুকের বিভিন্ন কলকারখানায় মাত্রাতিরিক্ত দূষণ অনেকটাই দুর্ভোগ বাড়িয়েছে এই শিল্প তালুক এলাকার আশেপাশের অঞ্চলগুলিকে। ইতিমধ্যেই এই দূষণ রোধের জন্য লাগাতার আন্দোলন করে বেশ কয়েকটি কলকারখানা কে দূষণ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র লাগাতে বাধ্য করেছে আসানসোলের রানীগঞ্জ ও জামুড়িয়া এলাকার স্থানীয় গ্রামের মানুষজন। তবে সব এলাকার গ্রামগঞ্জগুলিতে এমন একতা লক্ষ্য করা যায়নি তাই দূষণ ক্রমশই বেড়ে চলেছে।
এলাকার গাছপালা থেকে শুরু করে নদী নালা এমনকি বাড়ির ছাদ ও আজ দূষণের কবলে। যার জেরে বাড়ির ছাদে উঠোনে কাপড় মেলা ভার হয়েছে এমনকি অভিযোগ এসেছে রান্নাঘরে রান্নার কড়াইএও এসে পড়ছে ফ্যাক্টরির কালি। এই দূষণ দূর হবে কবে? কবেই বা তার নিয়ন্ত্রণের জন্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আরো বেশি সক্রিয় হবে তা নিয়েই বারংবার প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন অংশের দুর্ভোগে থাকা মানুষজন। এখন দেখার এ সকল কাটিয়ে উঠে কীভাবে এলাকাকে দূষণমুক্ত রেখে সকলের কর্মসংস্থান বজায় রাখা যায়।