কুন্তলের জামিনের আবেদন মামলায় বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ রায় নির্দেশ দেন, শর্তসাপেক্ষে জামিন পাবেন অভিযুক্ত। অভিযুক্তকে পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে। নিম্ন আদালতে শুনানির সময় তাঁকে হাজির থাকতেই হবে। মোবাইল নম্বর জমা দিয়ে দিতে হবে আদালতে। ওই মোবাইল নম্বরটি পরিবর্তন করা যাবে না। তা ছাড়া, কোনও সাক্ষীকে প্রভাবিত করতে পারবেন না। উল্লেখ্য, ইডির মামলায় জামিন পেলেও সিবিআইয়ের দায়ের করা মামলায় জামিন মঞ্জুর হয়নি কুন্তলের। ফলে এখনই জেল থেকে ছাড়া পাচ্ছেন না প্রাথমিক নিয়োগ মামলায় ধৃত ওই যুবক।
প্রাথমিক স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় নাম জড়ায় কুন্তলের। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের ‘ঘনিষ্ঠ’ তথা নিয়োগ মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত তাপস মণ্ডল তদন্তকারীদের কাছে দাবি করেছিলেন, ৩২৫ জন শিক্ষক পদপ্রার্থীর কাছ থেকে ৩ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা নিয়েছেন কুন্তল। বাঁকা পথে তৎকালীন যুবনেতার কাছে সব মিলিয়ে ১৯ কোটি টাকারও বেশি পৌঁছেছিল বলে দাবি করে সেই সংক্রান্ত কিছু তথ্যপ্রমাণও তদন্তকারীদের হাতে দেন তাপস। ঘটনাক্রমে ২০২৩ সালের ২১ জানুয়ারি প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি অভিযানের পর হুগলির তৎকালীন তৃণমূল যুবনেতা কুন্তল ইডির হাতে গ্রেফতার হন।
জামিন চেয়ে এর আগে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কুন্তল। তবে শীর্ষ আদালত ওই মামলা হাই কোর্টেই ফেরত পাঠিয়ে দেয়। কিছু দিন আগে ওই মামলাটি ওঠে উচ্চ আদালতে। সেখানে কুন্তলের আইনজীবী সওয়াল করেন, প্রাথমিকের মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত মানিক ভট্টাচার্য জামিন পেয়ে গিয়েছেন। তাই তাঁর মক্কেলেরও জামিন মঞ্জুর করা হোক। অন্য দিকে, ইডি জামিনের বিরোধিতা করে। তারা আদালতে জানিয়েছিল, কুন্তলের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। গ্রেফতারির পরেও তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দেড় কোটি টাকার বেশি ঢুকেছে বলে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে। ওই টাকার উৎস সম্পর্কে নির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেননি অভিযুক্ত। ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি বলেছিলেন, ‘‘মানিক জামিন পেয়েছেন বলে কুন্তলও পাবেন, এই যুক্তি ঠিক নয়।মানিককে শুধুমাত্র ইডি গ্রেফতার করেছিল। তাঁকে সিবিআই গ্রেফতার করেনি। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৪৭৯(২) ধারায় বলা রয়েছে, কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে একের বেশি মামলা বিচারাধীন থাকলে জামিন প্রযোজ্য হবে না। নিয়োগ দুর্নীতিতে কুন্তলের বিরুদ্ধে একের বেশি মামলা রয়েছে।’’ যদিও শেষমেশ শর্তসাপেক্ষে ইডির মামলায় জামিন মঞ্জুর হল কুন্তলের।
ঘটনাচক্রে বুধবারই রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির মামলায় রায় ঘোষণার কথা। এসএসসি নিয়োগ মামলায় পার্থ-সহ ধৃত নয় জনের জামিন হবে কি না দেখার। তবে পার্থ যদি সিবিআইয়ের মামলায় জামিন পান, এখনই তাঁর জেল থেকে মুক্তি হচ্ছে না। বাকি রয়েছে ইডির মামলা।