ছেলে বাড়ি ফিরল ২ বছর ৮ মাস পর, খুশিতে আত্মহারা বাবা-মা
বর্তমান | ২১ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, ইটাহার: অভিমানে ট্রাকে চেপে বাড়ি ছেড়েছিল ইটাহারের ১০ বছরের বালকের। দু’বছর ৮ মাস পর ছেলেকে ফিরে পেয়ে আনন্দে চোখে জল বাবা-মায়ের। প্রশাসন ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে ছেলেকে ফিরে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা বাবা মা ধন্যবাদ জানালেন পুলিস প্রশাসনকে। ইটাহারের কচুয়ার বাসিন্দা মহম্মদ রিয়াজুদ্দিন ও আক্তারা বিবির বড় ছেলে আলমগীর পড়াশোনার সুবাদে থাকত পাশের গ্রাম কাশিমপুরে মাসির বাড়িতে। ২০২২ সালের মার্চে আলমগীর মাসির বাড়ি থেকে হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যায়। দিল্লি থেকে মুম্বই-সব জায়গায় হন্যে হয়ে ছেলের খোঁজ করেন বাবা। নানা জায়গায় খোঁজাখুঁজির পর বালকের বাবা-মা ইটাহার থানার দ্বারস্থ হন। কিন্তু বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও খোঁজ না মেলায় হতাশ বাবা-মা একটা সময় বড় ছেলের আশাই ছেড়ে দেন। সোমবার ইটাহার থানা থেকে হঠাৎ ফোন রিয়াজুদ্দিনের কাছে, ‘আপনার ছেলেকে পাওয়া গিয়েছে।’ প্রথমটা বিশ্বাসই হয়নি রিয়াজ্জুদিনের। তারপর পুলিসের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলার পর আশ্বস্ত হন। ফোন রাখা মাত্রই অশ্রুসজল চোখে স্ত্রীকে পুরো বিষয়টি জানান রিয়াজ্জুদিন। তাঁরা ইটাহার থানার পুলিসের সহযোগিতায় পূর্ব বর্ধমান জেলার বয়রার এক আবাসিক মাদ্রাসা থেকে ছেলেকে ফিরিয়ে আনেন। বত্রিশ মাস পর ছেলেকে বুকে জড়িয়ে কেঁদে ফেলেন আক্তারা। বলেন, বরাত জোরে বড় ছেলেকে সুস্থ অবস্থায় ফিরে পেলাম। এতদিন কোথায় ছিল বালকটি? কীভাবে মাসির বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল? পুরোটা জানা গেল আলমগীরের কথাতেই। আলমগীর জানায়, মাসির বকুনিতে অভিমানে সে ট্রাকে উঠে পূর্ব বর্ধমান চলে যায়। ট্রাকচালক তাকে সেখানকার একটি মাদ্রাসায় রেখে আসেন। অভিমানী বালক সেই আবাসিক মাদ্রাসাতে পড়াশোনা করে। কিন্তু অভিমান কতদিন থাকে? তা ভাঙতেই বাবা-মায়ের জন্য মন আনচান করে বালকের। এরপর মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বালককে থানায় নিয়ে যান। সেখানকার পুলিস ইটাহার থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে। বুধবার সকালে ইটাহারে ফিরে আসে বালক। ইটাহারের পুলিস জানায়, বালককে বৃহস্পতিবার নিয়ম মেনে রায়গঞ্জ জেলা আদালতে পেশ করা হবে। তারপর নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
(নিখোঁজ ছেলেকে ফিরে পেয়ে আদর বাবা ও মায়ের। ইটাহার থানার সামনে তোলা নিজস্ব চিত্র)