কাল ও পরশু জল পরিষেবা বন্ধ শহরে, পরিস্থিতি সামলাতে জলের পাউচ, ট্যাঙ্ক পুরসভার
বর্তমান | ২১ নভেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: ফের দু’দিন বন্ধ থাকবে পানীয় জলের ফুলবাড়ি প্লান্ট। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্বোধন করা বিকল্প ইনটেক ওয়েলের সঙ্গে প্লান্টের সংযোগ কাজের জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা। যার ফলে আগামীকাল শুক্র ও পরশু শনিবার দু’দিন শিলিগুড়ি শহরে নলবাহিত পানীয় জল সরবরাহ হবে না। বুধবার সাংবাদিক সম্মেলন করে একথা বলেন মেয়র গৌতম দেব। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, পানীয় জলের পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে থাকবে ৩০টি ওয়াটার ট্যাঙ্ক। দু’দিনে দু’লক্ষ পাউচ জল বিলি করা হবে। কোথাও যাতে জলের সমস্যা না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা হবে।
শিলিগুড়ি শহরে পানীয় জলের বিকল্প ইনটেক ওয়েল তৈরির দাবি ছিল বহুদিনের। বিগত বামফ্রন্ট জমানায় সেই দাবি পূরণ হয়নি। পুরসভার ক্ষমতা দখলের মাত্র আড়াই বছরের মধ্যে সেই দাবি বাস্তবায়িত করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। প্রায় ৬ কোটি ৯ লক্ষ টাকায় ফুলবাড়িতে ওই ইনটেক ওয়েল তৈরি করা হয়েছে। ১৩ নভেম্বর দার্জিলিংয়ে সরকারি অনুষ্ঠান থেকে ভার্চুয়ালি সংশ্লিষ্ট ওয়েলের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার তা চালু করতে পুরসভা তৎপর।
পুরসভা সূত্রে খবর, নবনির্মীত ইনটেক ওয়েলকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জোড়া হবে ফুলবাড়ি প্লান্টের সঙ্গে। এজন্য প্লান্টের পন্ড ও ক্যানেলের একাংশ ড্রাই করতে হবে। শুক্রবার সেই কাজে হাত দেওয়া হবে। তা শেষ হবে শনিবার। মেয়র বলেন, ১৯৯৪ সালে পানীয় জলের ফুলবাড়ি প্লান্ট তৈরির কাজে হাত দিয়েছিল বামফ্রন্ট পরিচালিত বিগত পুরবোর্ড। সেই প্রকল্পের উদ্বোধন হয় ১৯৯৯ সালে। বহু দাবি জানানো সত্ত্বেও তারা বিকল্প ইনটেক ওয়েল তৈরি করেনি। যার ফলে ভারী বর্ষায় প্লান্টে পলি জমলে জল কিংবা তিস্তা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ লগগেট সংস্কারে হাত দিলে বন্ধ হয়ে যায় জল সরবরাহ। সেই সমস্যা মেটাতেই বিকল্প ইনটেক ওয়েল তৈরি করা হয়েছে। সেটি চালু করার জন্যই দু’দিন প্লান্ট বন্ধ থাকবে।
শহরে চাহিদার তুলনায় পুরসভার সরবরাহ করা জলের পরিমাণ অনেক কম। পুরসভা সূত্রের খবর, শহরে দৈনিক পানীয় জলের চাহিদা প্রায় ৭৫ মিলিয়ান লিটার। সেখানে ফুলবাড়ি প্লান্টে দৈনিক জল উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় ৫৫ মিলিয়ান লিটার। কাজেই দু’দিন প্লান্ট বন্ধ থাকলে শহরে পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দেবে বলেই আশঙ্কা। এর মোকাবিলায় একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়েছে নিয়েছে পুর কর্তৃপক্ষ। মেয়র বলেন, ওই দু’দিন শহরে নামানো হবে ৩০টি ট্যাঙ্কার। যারমধ্যে পাঁচটি পাঁচ হাজার লিটারের। সেগুলি জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তরের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে। বাকি ২৫টি পুরসভার। সেগুলি তিন হাজার লিটারের। এরবাইরে দিনে এক লক্ষ করে দু’দিনে দু’লক্ষ জলের পাউচ বিলি করা হবে।
এজন্য নাগরিকদের সহযোগিতা চেয়ে মেয়র জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত জল সরবরাহ করা হবে। যাতে নাগরিকরা চাহিদা মতো জল মজুত করে রাখতে পারেন। নাগরিকদের যাতে সমস্যা না হয় সেজন্য এ বিষয়ে শহরে মাইকিংও করা হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে মেয়র ছাড়াও ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার ও জল সরবরাহ বিভাগের মেয়র পরিষদ সদস্য দুলাল দত্ত ছিলেন।