ভারতের সমবায় আন্দোলনের বিস্তৃতি শতাব্দী প্রাচীন। চলতি বছর সেই আন্দোলনের ৭১তম বর্ষ উদযাপিত হল আলিপুরের ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে। এ বছর যার মূল ভাবনা ছিল ‘বিকশিত ভারত নির্মাণে সমবায়ের ভূমিকা’। গত ১৪ নভেম্বর শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠানের শেষদিন ছিল বুধবার ২০ নভেম্বর। অনুষ্ঠানের শেষ দিনের থিম ছিল ‘স্থিতিশীল উন্নয়ন অর্জন এবং উন্নততর বিশ্ব গঠনের লক্ষ্যপূরণে সমবায়ের ভূমিকা’। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের প্রবীণ রাজনীতিবিদ তথা রাজ্যের কৃষি এবং পরিষদীয় মন্ত্রকের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, বিধায়ক তথা সমবায় সমিতির চেয়ারম্যান স্বর্ণকমল সাহা, পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন মন্ত্রকের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী প্রদীপকুমার মজুমদার।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘমেয়াদি স্থায়ী উন্নয়নে সমবায় ব্যবস্থা, কর্ম নিরাপত্তা, সমবেতন ব্যবস্থা ও সামাজিক কর্মক্ষমতা অর্জনে ছাপ রেখেছে এই সমবায় ব্যবস্থা। শুধু তাই নয়, সমাজকল্যাণের কথা মাথায় রেখে জনস্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতেও অবদান রেখেছে সমবায় কাঠামো। সমাজে তার ভূমিকা দীর্ঘমেয়াদি স্থায়ী উন্নয়নের লক্ষ্যে এসডিজি-র অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশগত অবস্থান নির্দিষ্ট করে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী সমবায় ব্যবস্থা দশ কোটি লোকের কর্মসংস্থান করেছে। সমবায় ব্যবস্থা পৃথিবীর মোট অর্ধেক মানুষের জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করেছে। অর্থনীতির ওপর সমবায়ের প্রভাব সুদূরপ্রসারী। আর্থিক দিক থেকে বিচার করতে গেলে সমবায় অন্য যে-কোনও অর্থনৈতিক সংস্থার চেয়ে বেশি লাভজনক।
উল্লেখ্য, দারিদ্র দূরীকরণেও সমবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে কৃষি খাতে, সমবায় ক্ষুদ্র চাষিদের আর্থিক সহায়তা, প্রযুক্তিগত সুবিধা এবং পরিচ্ছন্ন ব্যবসার সুযোগ প্রদান করে, যা তাদের আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে। জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা সমবায় ব্যবস্থাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের ক্ষেত্রেও সমবায় একটি বড় ভূমিকা পালন করে। বিশেষত এইচআইভি ও এইডস আক্রান্ত রোগীদের যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে। বিশ্বজুড়ে সমবায় সংগঠন গৃহপর্যায় থেকে শুরু করে হাসপাতাল পর্যন্ত সেবা প্রদান করে, যা দশ কোটিরও বেশি পরিবারকে উপকৃত করেছে।