বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, আগামী দু’দিনের মধ্যে ওই এলাকা থেকে সমস্ত বেআইনি হোর্ডিং খুলে ফেলতে হবে। আদালতের নির্দেশ কার্যকর করে ২০ ডিসেম্বর হাই কোর্টে রিপোর্ট জমা দিতে হবে রাজ্যকে। এর মাঝে কোনও বিজ্ঞাপন সংস্থা হোর্ডিং-বিধি অমান্য করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হতে পারে জরিমানাও।
চলতি বছরে বিধাননগর পুরসভা এলাকায় বেআইনি হোর্ডিং নিয়ে আদালতে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন আইনজীবী দিবায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, বিধাননগরে পুরসভার নির্দেশিকা অমান্য করে বেআইনি ভাবে যত্রতত্র হোর্ডিং লাগানো হচ্ছে। মামলাকারীর বক্তব্য, বিভিন্ন হোর্ডিং থেকে বিপুল পরিমাণে রাজস্ব আসে পুরসভার কাছে। তাদের কয়েক হাজার কোটি টাকা আয় হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও বেআইনি হোর্ডিংয়ের বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন না পুর কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার হাই কোর্টে দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি ছিল। সেখানে রিপোর্ট জমা দিয়ে রাজ্য জানিয়েছে, ওই এলাকা খতিয়ে দেখে ৩৫১টি বেআইনি হোর্ডিং-এর খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। সেগুলি খুলে ফেলার জন্য সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞাপন সংস্থাকে নোটিস দেওয়া হয়েছে। এমনকি, সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়েও জানানো হয়েছে। এর পরেই প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘বেআইনি হোর্ডিং নিয়ে পুরসভা কেন পদক্ষেপ করছে না? ইচ্ছে করেই কি তারা নীরব রয়েছে? দু’দিনের মধ্যে হোর্ডিং খুলে দিতে বলুন। না হলে গ্রেফতার করুন।’’ রাজ্যের পাল্টা আশ্বাস, ওই সব সংস্থা কাজ না করলে পদক্ষেপ করবে পুরসভা।
মামলাকারীর বক্তব্য, বেআইনি হোর্ডিং নিয়ে নিয়ম না মানলে আইন অনুযায়ী কোনও ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা যেতে পারে। এ জন্য ছ’মাসের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানার নিদান রয়েছে। তাঁর আরও অভিযোগ, নিয়ম মেনে হোর্ডিং না লাগানোয় তা থেকে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে। ওই সব হোর্ডিং খুলে ফেলা না হলে বড়সড় বিপদ হতে পারে। উদাহরণ হিসেবে মুম্বইয়ের দুর্ঘটনার কথাও স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। গত মে মাসে মুম্বইয়ের ঘাটকোপার এলাকায় উপড়ে গিয়েছিল বিশালাকার একটি ধাতব বিজ্ঞাপনের বোর্ড। তাতে চাপা পড়ে ১৬ জনের মৃত্যু হয়। আহত হয়েছিলেন প্রায় ৮০ জন। উত্তরে রাজ্যের আইনজীবী জানিয়েছেন, তাদের কিছু সময় দেওয়া হোক। এর পরেও বিজ্ঞাপন সংস্থা কাজ না করলে পুরসভা পদক্ষেপ করবে।