হাওড়া স্টেশনে প্ল্যাটফর্মের শেষ প্রান্তে কংক্রিটের ধনুকাকৃতি যে উড়ালপুল চোখে পড়ে, তাস্থানীয় ভাবে চাঁদমারি সেতু বা বাঙালবাবু সেতু নামে পরিচিত। ইংরেজ আমলে ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলের তৈরি ‘বো স্ট্রিং’ শ্রেণির মূল সেতুটি ৬৫ মিটার লম্বা এবং ৭.৫ মিটার চওড়া। শুরুতে ওইজায়গায় রেললাইনের উপরে একটি কাঠের উড়ালপুল ছিল। উনিশ শতকে ঢাকা থেকে হাওড়ায় আসা রামযতন বসু রেললাইন পেরিয়ে অন্য প্রান্তে বাজারে যাওয়ার সুবিধার জন্য একটি কাঠের সেতু নির্মাণকরেন। পরে ১৯৩৩ সালে ইংরেজরা ওই জায়গায় কংক্রিটের বর্তমান সেতুটি তৈরি করে।
কংক্রিটের দু’লাইনের সেই সেতুর মেয়াদ এ বার শেষের মুখে। তাইতার জায়গা নিতে চলেছে ২৬ মিটার চওড়া নতুন এই ঝুলন্ত সেতু। রেললাইন থেকে পুরনো সেতুর উচ্চতা ছিল ৫.১ মিটার। নতুন সেতুটির উচ্চতা বেড়ে হবে ৬.৫ মিটার। রেললাইনের উপরে থাকা এই ঝুলন্ত সেতুর মূল অংশটি ১১টি খণ্ডে বিভক্ত। তার মধ্যে সেতুর মূল অংশে ৯টি খণ্ড রয়েছে, যার মধ্যে ৫টি খণ্ডের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সেতু নির্মাণের যেপদ্ধতি অবলম্বন করা হচ্ছে, তাতে একটি প্রান্ত থেকে বিভিন্ন খণ্ডাংশ জুড়ে সেতুর পাটাতন নির্মাণ করা হচ্ছে। পরে ওই পাটাতন ক্রেন এবং রোলারের সাহায্যে ধীর গতিতে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। হাওড়ায় রাতের দিকে ট্রেন চলাচল বন্ধ রেখে রেললাইনের উপরে থাকা সেতুরওই অংশ ধীরে ধীরে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করা হচ্ছে। এক-একটি খণ্ড জুড়তে প্রায় ৫৬ দিনসময় লাগছে। রোলারের সাহায্যে একটি খণ্ডের পরিসর এগিয়ে নিয়ে যেতেই সময় লাগছে গড়ে৩৬টি রাত। মাঝরাতের পরে দৈনিক চার ঘণ্টা করে ট্রেন চলাচল বন্ধ রেখে ওই কাজ করা হচ্ছে বলে রেল সূত্রের খবর।