চলতি বছরে এই নিয়ে দু’জন পর্যটকের মৃত্যুর ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, পাহাড়ে বেড়াতে আসা পর্যটকদের জন্য আরও কড়া নিয়ম চালু করার কথা ভাবছে তারা। শীঘ্রই পর্যটকদের শারীরিক পরীক্ষা চালু হতে পারে সেখানে। দার্জিলিং সদরের মহকুমাশাসক রিচার্ড লেপচা বলেন, ‘‘সান্দাকফু বেড়াতে গিয়ে কলকাতার এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। প্রশাসনের তরফে জিটিএ-র সঙ্গে আলোচনা করে পাহাড়ে বেড়াতে আসা পর্যটকদের জন্য স্বাস্থ্য সম্পর্কিত একটি নির্দেশিকা জারি করা হবে। যা আগামী সপ্তাহ থেকে কার্যকর করা হবে।’’
১১ হাজার ৯২৯ ফুট উঁচু পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ স্থানটি ট্রেক রুট হিসাবে বেশ জনপ্রিয়। সাধারণত, ৬৩২৫ ফুট উঁচু শহর মানেভঞ্জনে পৌঁছনোর পর শুরু হয় ট্রেকিং। তবে বেশ কয়েক বছর ধরেই ল্যান্ডরোভার গাড়ি চলতে শুরু করেছে ওই পথে। ফলে হেঁটে নয়, গাড়ি চেপে খুব সহজেই উচ্চতা ও দূরত্ব অতিক্রম করে সান্দাকফু পৌঁছে যাওয়া যায় এখন। সপরিবার গত ১৯ নভেম্বর সান্দাকফুর উদ্দেশে দার্জিলিং থেকে রওনা দিয়েছিলেন আশিস। পথে তাঁরা ধোতরেতে রাত কাটান। মঙ্গলবার সেই রাতেই আশিসের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। সেখান থেকে তাঁকে দ্রুত সুখিয়াপোখরি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি! প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক আশিসকে মৃত ঘোষণা করেন। আশিসের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য দার্জিলিং জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। ময়নাতদন্তের পর তাঁর দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল বুধবার। বৃহস্পতিবার আশিসের দেহ নিয়ে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন তাঁর পরিবারের সদস্যেরা। পর্যটকের দেহ বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সব রকম বন্দোবস্ত করেছে প্রশাসনই।
পর্বতারোহী মহলের মতে, পাহাড়ে আচমকা বেশি উচ্চতায় শারীরিক সমস্যা হতেই পারে। অনেক সময়েই আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার (অ্যাক্লাইম্যাটাইজেশন) অসুবিধা হয়। তবে সান্দাকফু বা ফালুটের উচ্চতায় গিয়ে মৃত্যুটা খুব স্বাভাবিক নয়। তাঁদের অনুমান, এ ক্ষেত্রে হয়তো রক্তচাপ ও উচ্চতার ধাক্কা একসঙ্গে সামলাতে পারেননি আশিস।
এর আগে চলতি বছরে মে মাসে উত্তর দিনাজপুরের এক পর্যটকেরও একই ভাবে মৃত্যু হয়েছিল। তাঁর বয়স ছিল ২৯। ২০২২ সালে অক্টোবর মাসে ইজরায়েলের এক পর্যটক মানেভঞ্জন থেকে সান্দাকফু পর্যন্ত ট্রেকিং করতে গিয়েছিলেন। রাতে টেন্টে ঘুমের মধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয়েছিল।