গত অগস্টে জামিন পেয়েছেন বাকিবুর। জামিন পাওয়ার পরে বুধবার বিদেশ যাওয়ার অনুমতি চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার আদালতে সেই আবেদনের বিরোধিতা করে ইডি। তাদের আইনজীবী অরুণ ভক্ত দাবি করেন, রেশন দুর্নীতিকাণ্ডের ‘মাস্টারমাইন্ড’ বাকিবুর। ওই দুর্নীতির টাকা হাওয়ালার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে দুবাইয়ে যেত। ইডির দাবি, সেই টাকায় দুবাইয়ে সম্পত্তি কিনেছিলেন বাকিবুর। আদালতে আশঙ্কা প্রকাশ করে ওই আইনজীবী জানিয়েছেন, দুবাইয়ে গিয়ে দুর্নীতির টাকায় কেনা সম্পত্তি বিক্রি বা অন্য নামে সরাতে পারেন বাকিবুর। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা দুবাই সরকারের সাহায্য নিয়ে তদন্তের জন্য সেখানকার সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাই। এই পরিস্থিতিতে বাকিবুর সেখানে গেলে তদন্ত বাধা পেতে পারে।’’ ইডির আইনজীবীর আরও দাবি, বাকিবুরের ‘রাজনৈতিক যোগ’ রয়েছে। তিনি ‘প্রভাবশালী’ ব্যক্তি। এখনও তাঁর মাধ্যমে টাকা পাচার হতে পারে। এক বার বিদেশ গেলে সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না বলেও আদালতে দাবি করেছে ইডি।
যদিও বিচারক জানিয়েছেন, বাকিবুরের বিদেশযাত্রায় এই মুহূর্তে কোনও ‘ঝুঁকি’ রয়েছে বলে আদালত মনে করছে না। ইডির আইনজীবীকে তিনি বলেন, ‘‘আপনাদের যে বিষয়ে চিন্তা, সেই বিষয়ে কোনও নথি তো নেই। বাকিবুরের বিরুদ্ধে এই মামলা ছাড়া আর কোনও অপরাধের মামলাও নেই।’’ তিনি এ-ও জানিয়েছেন, বাকিবুরকে জামিন দেওয়ার শর্ত ছিল যে, তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না। তবে তিনি কেওয়াইসি আপডেট করতে যাবেন বলে জানিয়েছেন। বাকিবুরের আইনজীবীও দাবি করেছেন, দুবাইয়ে থাকার অনুমতির পুনর্নবীকরণ করানোর প্রয়োজন রয়েছে। দুবাইতে ভিলা রয়েছে বাকিবুরের। পাশাপাশি, তাঁর মায়ের সঙ্গে যৌথ মালিকানায় ফ্ল্যাটও রয়েছে। আয়কর রিটার্নে উল্লেখ রয়েছে তার।
রেশন দুর্নীতির মামলায় গত বছরের ১৩ অক্টোবর বাকিবুরকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। চালকল, হোটেল-সহ একাধিক ব্যবসা রয়েছে তাঁর। রেশন দুর্নীতিকাণ্ডের তদন্তে নেমে সেই সব জায়গায় হানাও দিয়েছিলেন ইডি আধিকারিকেরা। ইডি সূত্রের দাবি, বাকিবুরের বাড়ি থেকে পাওয়া নথির সূত্র ধরেই রেশন দুর্নীতি মামলায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের নাগাল পেয়েছিলেন তাঁরা। গত অগস্টে বিশেষ ইডি আদালত থেকে জামিন পান বাকিবুর। জামিনের তিন মাস পরে বিদেশযাত্রার অনুমতি চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি।