সংবাদদাতা, কল্যাণী: সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার সকালে কল্যাণী পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাছারিপাড়ায় তুলকালাম কাণ্ড ঘটে যায়। সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রস্তাবিত সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের জন্য চিহ্নিত সরকারি জমিতে পাঁচিল তৈরির সময় তাতে বাধা দেয় স্থানীয় লোকজন। স্থানীয়দের বিক্ষোভে যোগ দেন বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায়। বিধায়কের উপস্থিতিতে বিক্ষোভকারীরা সরকারি কাজ আটকানোর পাশাপাশি পুলিসকে লক্ষ্য করে তুমুল ইটবৃষ্টি শুরু করে। পাল্টা লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালিয়েও লাভ না হওয়ায়, পুলিস কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে মারমুখী জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে। খণ্ডযুদ্ধে চার পুলিস কর্মী সহ বেশ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা জখম হয়েছেন। সরকারি কাজে বাধা, পুলিসকে আক্রমণ সহ নানা অভিযোগে বিজেপি বিধায়ক সমেত মোট ১৪ জনকে আটক করে কল্যাণী থানার পুলিস। বিধায়কের মুক্তির দাবিতে থানায় বিক্ষোভ শুরু করে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। রাতে বিধায়ককে ছেড়ে দেওয়া হলেও, বাকি ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা এলাকায় থমথমে পরিবেশ। এলাকায় পুলিস মোতায়েন রয়েছে।
জানা গিয়েছে, কল্যাণী শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাছারিপাড়ায় সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের জমিতে পাঁচিল দেওয়ার কাজে বিগত কয়েকদিন ধরে বাধা দিয়ে আসছিল স্থানীয়রা। অভিযোগ, সেই কাজে মদত দিচ্ছেন বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায়। যদিও অম্বিকাবাবুর দাবি, আদালতের নির্দেশ মানছে না পুরসভা। এই জমিতে আদালতের স্থগিতাদেশ আছে। এছাড়াও ওই এলাকায় ওখানকার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে চাষাবাদ করছে। ডাম্পিং গ্রাউন্ড হলে দুর্গন্ধ ছড়াবে। পরিবেশ নষ্ট হবে। এরপর মঙ্গলবার বিকেলে সব পক্ষকে নিয়ে মহকুমা শাসক অভিজিৎ সামন্তের দপ্তরে বৈঠক হয়। মহকুমা শাসক জানান, ওখানে সামান্য জমির উপর আদালতের স্থগিতাদেশ রয়েছে। বাকি জমি নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। সেখানেই বৃহস্পতিবার কাজ শুরু হলে বাধা দেওয়া হয়। পাঁচিল তৈরির কাজ নিয়ে পুলিসের সঙ্গে স্থানীয়দের এবং বিধায়কের বচসা শুরু হয়। এই পর্বেই মারমুখী হয়ে ওঠে জনতা।
কল্যাণী পুরসভার চেয়ারম্যান নীলিমেশ রায়চৌধুরী বলেন, মিথ্যা প্রচার চলছে। ডাম্পিং গ্রাউন্ড বলে বিধায়ক ভুল বোঝাচ্ছে। ওখানে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট হচ্ছে। আবর্জনার স্তূপ না করে, তা পৃথকীকরণের কাজ হবে। উন্নয়নের কাজে বিধায়ক বাধা দিচ্ছেন। অম্বিকাবাবুর গ্রেপ্তারি খবর পেয়ে কল্যাণী থানায় এসেছিলেন বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া। তাঁর কথায়, পুলিশ চক্রান্ত করে আটক করেছিল বিধায়ককে।