স্বাধীনতা সংগ্রামীদের বিস্মৃত কাহিনি এক টাকার পাঠশালায়
বর্তমান | ২২ নভেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: কেমনভাবে এসেছিল ভারতের স্বাধীনতা? মাতৃভূমিকে স্বাধীন করতে কতটা ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন সংগ্রামীরা। কীভাবে জীবন কাটাতেন তাঁরা? স্বাধীনতা প্রাপ্তির ৭৭ বছর পর অনেক বিপ্লবীর কথাই চলে গিয়েছে বিস্মৃতির অতলে। মরচে ধরেছে দেশের মগজে। বহু শিশু অনেক বিপ্লবীর নামই শোনেনি। এবার স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জীবনকাহিনি শিশুদের সামনে তুলে ধরার উদ্যোগ নিল হাবড়ার ‘এক টাকার পাঠশালা’।
বিস্মৃতির আড়ালে থাকা সংগ্রামীদের জীবনকাহিনি অডিও ভিস্যুয়াল মাধ্যমে পাঠশালায় দেখাচ্ছে পাঠশালাটি। জানা তিরিশেক শিশু তা দেখে উত্তেজিত। উদ্বুদ্ধ। হাবড়ার কুমড়া পঞ্চায়েতের টুনিঘাটা গ্রামে বেশ কয়েকবছর ধরে চলছে এক টাকার পাঠশালা। আবৃত্তি, অঙ্কন, তবলা শেখে বাচ্চারা। পড়াশোনা করে। এবার দেখানো হচ্ছে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কাহিনিও। হাবড়ার টুনিঘাটা, পাড়ুইপাড়া, বয়েরঘাটা গ্রামে বসবাস মূলত তপসিলি জাতি, উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষদের। অধিকাংশই দিন আনা দিন খাওয়া পরিবার। বেশিরভাগ পুরুষ হয় দিনমজুর নয় বিল থেকে মাছ ধরে পেট চালান। অধিকাংশ মহিলা মাঠে কৃষিকাজে যুক্ত নতুবা পরিচারিকার কাজ করেন। শিশুরা স্কুলে যায়। তবে অত্যন্ত অনিয়মিত। বাড়িতে শিক্ষক রেখে বাচ্চাদের টিউশন দেওয়ার কথা পরিবারগুলি ভাবতেই পারে না। একদিন সঞ্জীব কাঞ্জিলাল নামে এক ব্যক্তি তাঁর বন্ধুদের একজোট করে এক টাকার পাঠশালা তৈরি করলেন। সঞ্জীব একটি বেসরকারি সংস্থার অধীনে জাহাজে নাবিকের কাজ করেন। মাসে পড়ুয়াদের কাছ থেকে বেতন নেওয়া হয় এক টাকা করে। এবার সঞ্জীববাবুরা প্রতিমাসে বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জীবনকাহিনি দেখাবেন। সঞ্জীববাবু বলেন, ‘সরলাদেবী চৌধুরী, সন্তোষ মিত্র, বটুকেশ্বর দত্ত, গোপীনাথ সাহা বা বীণা দাসের মতো বাংলার বহু বীর স্বাধীনতা সংগ্রামীর জীবন অনেকের কাছে অজানা। আমরা এঁদের প্রায় ভুলতে বসেছি। তাই তাঁদের বিষয়ে জানাতে খুদেদের পাঠ দিচ্ছি।’ স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণ থেকে জীবন সংগ্রাম সব দেখানো হবে। বিষয়টি জনপ্রিয় হয়েছে। এলাকার অনেক মানুষ চলে আসছেন। বাচ্চাদের সঙ্গে বসে দেখছেন। শোয়ের মাধ্যমে উঠে আসছে বিপ্লবীদের কাহিনি দেশের বহু না জানা কাহিনিও।